নতুন দিনের বার্তা দিয়ে ব্রাজিলকে ৫–০ গোলে জেতালেন ভিনি–রদ্রিগো–এস্তেভাওরা

0
20
জোড়া গোল করেছেন রদ্রিগো, রয়টার্স

ব্রাজিলের ফুটবলে কি তবে নতুন দিনের সূর্যোদয় হলো? একটা মাত্র ম্যাচ দেখে এমন মন্তব্য করা কঠিন। তবে আজ ব্রাজিল যেভাবে খেলল, তাতে মনে হলো, যেন বহুদিনের খরার পর হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। এই ব্রাজিলের অপেক্ষাতেই তো ছিল সবাই! কৌশল, নান্দনিকতা আর দারুণ ফলের এ যেন এক অদ্ভুত, মন-ভোলানো সমন্বয়।

গত সেপ্টেম্বরে বলিভিয়ার বিপক্ষে হারে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শেষ করেছিল ব্রাজিল। সেই হারের পর ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল অনেক। কিন্তু মনে হচ্ছে, দুঃসময়টা খুব দ্রুতই পেছনে ফেলে এসেছে তারা। অন্তত আজ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে সে রকমই ইঙ্গিত মিলেছে।

ছন্দ, গতি আর নান্দনিকতার মিশেলে সিউলে শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। রদ্রিগো ও এস্তেভাও করেছেন জোড়া গোল। গোল পেয়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও। তবে শুধু গোলের হিসাবেই নয়, ম্যাচজুড়ে সেলেসাওদের ফুটবল ছিল চোখ ধাঁধানো।

সিউল ওয়ার্ল্ডকাপ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই দাপট দেখিয়েছে ব্রাজিল। ডিফেন্স থেকে আক্রমণ গড়া, মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ—সবই ছিল গোছানো। খেলোয়াড়দের বোঝাপড়া আর পাসিং ছিল দেখার মতো। শুরুতে কয়েকবার ব্যর্থ হলেও এগিয়ে যেতে সময় লেগেছে মাত্র ১৩ মিনিট।

দলীয় আক্রমণে রদ্রিগোর পাস থেকে বল পান ব্রুনো গিমারেস। নিউক্যাসল মিডফিল্ডারের ডিফেন্সচেরা পাস ধরে নিঁখুত ফিনিশিংয়ে গোল করেন চেলসি তারকা এস্তেভাও। গতি, নিখুঁত পাসিং আর ফিনিশিং—সব মিলিয়ে ব্রাজিলীয় ফুটবলের এক নিখাদ উদাহরণ সেই গোল।

গোল ও সহায়তা দুটোই করেছেন ভিনিসিয়ুস
গোল ও সহায়তা দুটোই করেছেন ভিনিসিয়ুসরয়টার্স

এগিয়ে গিয়ে আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে ব্রাজিল। ১৭ মিনিটে কাসেমিরোর হেডে গোল হলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। ২০ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে সুযোগ নষ্ট করেন রদ্রিগো। ২৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু কৌশলেই নয়, ব্রাজিলের গতি ও ছন্দের সঙ্গে তাল মেলাতেও হিমশিম খাচ্ছিল। মাঝেমধ্যে আক্রমণে গেলেও ব্রাজিলের বক্সের কাছাকাছি গিয়ে থেমে গেছে তাদের সব চেষ্টা।

৪০ মিনিটে আসে ব্রাজিলের দ্বিতীয় গোল। বাঁ দিক দিয়ে ভিনিসিয়ুসের পাস ডামি করে কাসেমিরোর উদ্দেশে ছেড়ে দেন রদ্রিগো। পরে কাসেমিরোর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা।

বিরতির পরও একই ছন্দে খেলেছেন কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ৪৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান ৩–০ করেন এস্তেভাও। তবে এ গোলের কৃতিত্বের চেয়ে দায় বেশি দক্ষিণ কোরিয়ার ডিফেন্ডার কিম মিন–জায়ের। একটু পর ভিনিসিয়ুসের সহায়তায় রদ্রিগো করেন নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল। ৭৭ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ থেকে ভিনিসিয়ুস করেন দলের পঞ্চম গোল।

গোলের পর এস্তেভাওয়ের উদ্‌যাপন
গোলের পর এস্তেভাওয়ের উদ্‌যাপন,রয়টার্স

আন্তর্জাতিক বিরতিতে ব্রাজিলের পরের প্রীতি ম্যাচ ১৪ অক্টোবর, প্রতিপক্ষ জাপান। আজকের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, সেই ম্যাচের জন্যও হয়তো অনেকে এখন থেকেই ক্যালেন্ডারে দাগ টেনে রাখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.