নতুন টেলিভিশনের অনুমোদন নিয়ে যে হাহাকার, তা ‘পুরাতন বন্দোবস্তের’ হাহাকার: মাহফুজ আলম

0
22
‘গণমাধ্যমে জুলাই ও তারপর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। পিআইবি মিলনায়তন, ঢাকা। ৯ অক্টোবর

অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পুরোনো প্রক্রিয়ায় নতুন দুটি টেলিভিশনের লাইসেন্স বা অনুমোদন দেওয়া নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘আজকে টেলিভিশন অনুমোদন নিয়ে যে হাহাকার, এই হাহাকার হচ্ছে পুরাতন বন্দোবস্ত এবং যারা মনে করে যে নতুন কোনো মানুষ বা নতুন কোনো মুখ যাতে না আসে, তাদের হাহাকার। এগুলো আমরা বুঝি।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমে জুলাই ও তারপর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে পিআইবির পাঁচটি প্রকাশনা ‘তারিখে জুলাই’, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবিতা’, ‘নিরীক্ষা: অভ্যুত্থান মিডিয়া বয়ান’, ‘যে সাংবাদিকদের হারিয়েছি’ এবং ‘ঘটনাপঞ্জি ২০২৪’ প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তব্যের এক পর্যায়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আজকে টেলিভিশন অনুমোদন নিয়ে যে হাহাকার, এই হাহাকার হচ্ছে পুরাতন বন্দোবস্ত এবং যারা মনে করে যে নতুন কোনো মানুষ বা নতুন কোনো মুখ যাতে না আসে, তাদের হাহাকার। এগুলো আমরা বুঝি। এ জন্য আমি গতকাল স্পষ্ট বলেছি এবং আমি যদি এক দিনও থাকি সরকারে, আমি চেষ্টাটাই করব যে আমি নতুন মিডিয়া (গণমাধ্যম) দিয়ে দেব। আমরা যেহেতু ফ্যাসিবাদের মিডিয়া বন্ধ করিনি, আমরা নতুন মিডিয়া দেব।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নতুন মিডিয়ার মাধ্যমে নতুন মুখ আসবে, নতুন ন্যারেটিভ আসবে, নতুন বক্তব্য আসবে এবং এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে বক্তব্যের লড়াই হবে। যেহেতু আমরা ভায়োলেন্সে (সহিংসতা) যাইনি, ফলে বক্তব্যের বিরুদ্ধে বক্তব্যের লড়াই ও চিন্তার বিরুদ্ধে চিন্তার লড়াইয়ে আমরা যাব। আমরা মনে করি, আমরা অবশ্যই জয়ী হব। এগুলো খুবই স্পষ্ট কথা। এখানে কোনো ধোঁয়াশা রাখার কিছু নেই।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ভূমিকা নিয়ে পিআইবিকে একটি গবেষণা করার আহ্বান জানান মাহফুজ আলম। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থান এবং তার আগে আওয়ামী লীগের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের সময় দেশের গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকার মূল্যায়ন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাহফুজ জানান, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা মূল্যায়ন করে একটি প্রতিবেদন তৈরির অনুরোধ জানিয়ে তিনি গত জুনে জাতিসংঘকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। আগস্টে তাঁকে ইউনেসকোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ইউনেসকোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের জন্য একটি কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। সেই কাজটি তারা করছে।

অনুষ্ঠানে সভাপ্রধান ছিলেন পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরদৌস আজিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, লেখক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং লেখক ও গবেষক সাইমুম পারভেজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির তথ্য ও গবেষণা কর্মকর্তা সহুল আহমেদ মুন্না। পাঁচটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনার পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে পিআইবির ফ্যাক্ট চেকিং উদ্যোগ ‘বাংলা ফ্যাক্ট’–এর ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করেন তথ্য উপদেষ্টা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.