ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, রেকর্ড বৃষ্টি হতে পারে যেসব জেলায়

0
39
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান বৃষ্টিপাতের মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে টানা ৩ দিন দেশের বিভিন্ন জেলায় রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

রোববার (২৫ মে) নিজের সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান। সেই সঙ্গে ওই পোস্টে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া লঘুচাপটি কীভাবে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে, সে বিষয়েও তিনি ধারণা দিয়েছেন।

মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, রোববার ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে পাওয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৭ কিংবা ২৮ মে (মঙ্গল বা বুধবার) উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে একটি লঘুচাপ অথবা নিম্নচাপ সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি লিখেন, এক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় প্রায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হয়, তবে তাকে ঘূর্ণিঝড় বলে। তবে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬৩ কিলোমিটারের চেয়ে কম হয়ে থাকলে তাকে লঘুচাপ (৩১ কি.মি./ঘণ্টা অপেক্ষা কম) বলা হয়। পাশাপাশি বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে নিম্নচাপ এবং গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১ থেকে ৬২ কিলোমিটার হলে তাকে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এই আবহাওয়াবিদ আরও লেখেন, আগামী ২৯, ৩০, ও ৩১ মে (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভাব্য লঘুচাপ বা নিম্নচাপ অথবা গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রেকর্ড ব্রেকিং পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এই ৩ দিনে বাংলাদেশের এবং ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি পরিমাণে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

পোস্টে তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত কোন বিভাগের উপরে হবে, সেটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপটি ঠিক উপকূলের কোন স্থানের উপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে এবং ঠিক কত ধীরে স্থলভাগের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে, তার ওপর নির্ভর করছে। যদি খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে প্রবেশ করে, তবে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রংপুর বিভাগ ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। আর যদি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে প্রবেশ করে, তবে চট্টগ্রাম বিভাগ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবারের (২৭ মে) মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যেটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদফতর। সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘শক্তি’। এ ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা।

এদিকে, সোমবার (২৬ মে) আবহাওয়া অফিস এক পূর্বাভাসে জানায়, আগামী বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার) পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে।

১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বর্ষণকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতকে মাঝারি ধরণের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বর্ষণকে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হলে সেই অবস্থাকে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলে থাকে আবহাওয়া অফিস।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.