রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীসহ কয়েকজনের ওপর হামলা হয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির বাইরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে তাঁরা মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করতে গিয়েছিলেন। কর্মসূচি শেষে ফেরার সময় আজ বুধবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী রাত সোয়া নয়টার দিকে বলেন, মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি শেষ হওয়ার মুহূর্তে কয়েকজন ব্যক্তি লাঠিসোঁটা হাতে রোকেয়া প্রাচীসহ অন্যদের ওপর হামলা চালান। আহত অবস্থায় রোকেয়া প্রাচীকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য বলেন, মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি শেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে বের হওয়ার সময় কিছু ব্যক্তি রোকেয়া প্রাচীসহ অন্যদের ধাওয়া দেন। তখন তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যান। এ সময় কয়েকজনের ওপর হামলা হয়েছে।
এর আগে দুপুরের দিকে ফেসবুকে এই অভিনেত্রী ১৫ আগস্টের শোক দিবস উপলক্ষে সেখানে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আছি ধানমন্ডি ৩২। হোক সব হত্যার, সব নৈরাজ্যের বিচার। বিচার হোক বাঙালির ইতিহাস হত্যার। আছি। আমরাও বিচার চাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে স্মরণ করব স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস। আছি পুড়ে যাওয়া ৩২-এ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
ফেসবুক পোস্টের ঘোষণা অনুযায়ী পরে তিনি নিজে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থান নেন। সন্ধ্যার দিকে মোমবাতি প্রজ্বালনের সময় ৩০–৩৫ জন মানুষ তাঁর সঙ্গে অংশ নেন।
মোমবাতি প্রজ্বালনের সময় রোকেয়া প্রাচী বলেন, ‘আমরা সবাই আজ এখানে একত্র হয়েছি, কারণ আমাদের বাংলাদেশ পুড়েছে। আমরা একত্র হয়েছি, কারণ আমাদের ১৯৭১ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্র হয়েছি, কারণ আমাদের বঙ্গবন্ধুর ছবি পুড়েছে। ধানমন্ডির ৩২ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্র হয়েছি বাংলাদেশ পুড়েছে বলে। আমরা এখানে কোনো রাজনীতির কথা বলতে আসিনি। বাংলাদেশ আমাদের সবার। আমরা এখানে শোক প্রকাশ করতে এসেছি শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাদের জন্য এই বাংলাদেশ দিয়েছেন, সংবিধান দিয়েছেন। এই ৩২ যখন পুড়েছে, তখন মনে হয়েছে আমরা পুড়েছি। আমরা এই ধানমন্ডি ৩২–এ দাঁড়িয়ে বিশ্বের এই মহানায়কের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমরা লজ্জিত। বাঙালি জাতি লজ্জিত আজকে।’
হামলার ঘটনার পর রাত নয়টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মিরপুর রোড থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের সংযোগমুখে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। ব্যারিকেডের ভেতর সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। মূল সড়কে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন।