প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের রাজধানী ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের মালিকানা বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রায় ৩০০ কোটি টাকা দামের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ২৯ নম্বর বাড়ি সরকারের বলে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সোমবার এই আদেশ দেন। আদেশে ধানমণ্ডির ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে এস নেহাল আহমেদের লিভ টু আপিলও (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করা হয়েছে। এর ফলে তথ্য গোপন করে একই বাড়ির মালিকানা দাবি করে রিট দায়ের করায় হাইকোর্টে সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার আদেশও বহাল রয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
গত বছরের ২১ নভেম্বর ধানমন্ডির ২নম্বর রোডের প্রায় ৩০০ কোটি দামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিকানা সরকারের বলে রায় দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তথ্য গোপন করে ওই বাড়ির মালিকানা দাবি করে রিট দায়ের করায় সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন সংক্ষুব্ধরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সংশ্লিষ্টদের আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ধানমন্ডি ২নম্বর রোডের আলোচিত ২৯নম্বর বাড়ি ১৯৭২ সালে তৎকালীন মালিক পরিত্যাগ করে চলে যাওয়ায় সরকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। পরে ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে তোয়াব খান, আবেদ খান ও অন্যরা প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে ১৯৮৯ সালে মামলা করেন। সাক্ষ্য ও পক্ষদ্বয়ের কাগজপত্র ও সরকারি নিবন্ধক দপ্তরের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্ট বর্ণিত সম্পত্তি সরকার আইনসঙ্গতভাবেই পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে বলে রায় দেন।
তিনি আরও বলেন, ওই রায় বহাল থাকাবস্থায় এস. নেহাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ১৯৮৭ সালের আবেদন দেখিয়ে ১৯৯৬ সালে প্রথমে সেটেলমেন্ট কোর্টে মামলা করেন। তবে ওই মামলায় সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি। প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্ট কোনো সাক্ষী না দিলেও বা সমর্থনীয় এবং আবশ্যকীয় কাগজপত্র দাখিল করা না হলেও নেহাল আহমেদ দাবিকারী ব্যক্তির পক্ষে রায় দেন।
পরবর্তীতে ওই রায় বাস্তবায়নে এস. নেহাল আহমেদ হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করেন। এই মামলাগুলোতে সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্বক প্রকৃত তথ্য উপাত্ত দাখিল না করায় হাইকোর্ট পুনরায় এস. নেহাল আহমেদের পক্ষে রায় দেন। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে দেরিতে আপিল করা হয়েছে জানিয়ে আদালত আপিল তামাদি ঘোষণা করে তা খারিজ করে দেন। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানানো হয়।