কথা দিচ্ছি, আর কখনোই ভক্তদের কাছ থেকে হারাব না: বালাম

0
105
বালাম

অভিমান করে গান থেকে দূরে ছিলেন। তবে খুব বেশি দিন থাকতে পারলেন না। তিন বছর বিরতির পর গত ভালোবাসা দিবসে ফিরেছেন বালাম। সেই থেকে ফেসবুকে গান, ভিডিও শেয়ার করে ভক্তদের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করছিলেন। গত সপ্তাহে ‘কী নেশা’ গানের ১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। মুহূর্তেই ভাইরাল হওয়া গানটির ভিউ ৩১ লাখের বেশি। শেয়ার হয়েছে ২৩ হাজার। ঠিক যেন ২০০৭-এ ফিরে গেলেন বালাম, যে বছর প্রকাশ পেয়েছিল তাঁর প্রথম অ্যালবাম।

২০০৭ সালে বালামের প্রথম অ্যালবামের গানগুলোর গ্রহণযোগ্যতার ওপর নির্ভর করছিল তাঁর ক্যারিয়ার। এবারের ‘কী নেশা’র প্রতিক্রিয়াও তাঁকে অনেকটা সেভাবেই আবেগাপ্লুত করেছে। বালাম বলেন, ‘শুরুর দিকে তো আমাকে তেমন কেউ চিনতেন না। আমার গান কীভাবে শ্রোতারা নেবেন, আদৌ গ্রহণ করবেন কি না, সে চিন্তা ছিল। একটু একটু করে গানগুলো দর্শক গ্রহণ করলেন। এবার বিরতির পরও একই চিন্তা পেয়ে বসল।

বালাম
বালাম

দীর্ঘদিন গানে নেই, ফেসবুকেও নেই। নতুন করে শুরু করতে হলো। কিছু গান ফেসবুকে শেয়ার করতে থাকি। এর মধ্যে “কী নেশা” হাজার হাজার মানুষ শেয়ার করেন।’

অন্তর্জালে মন খারাপের মেঘ
ফেসবুকে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন বালাম। মাঝেমধ্যে লগইন করে দেখতেন কেবল। কিছু ঘটনায় আনন্দ হতো, কিছু কারণে মন খারাপ। ভক্তদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ায় অপরাধবোধ হতো। ফেসবুকে ঢুকলেই হাজারো ভক্তর অনুরোধ, ‘প্লিজ, ক্যাম ব্যাক বালাম ভাই।’ ভক্তরা আর কী লিখতেন, যা আপনার মনটা খারাপ করে দিত? এমন প্রশ্নে বালাম বলেন, ‘অনেক ভক্ত লিখতেন—“টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে আপনার অ্যালবাম কিনেছি। বাসায় পিটুনিও খেয়েছি। তারপরও অ্যালবাম কিনে আপনার গান শুনেছি। আপনি প্লিজ নতুন গান নিয়ে আসুন।” কেউ লিখেছেন, “আপনার গান শুনে প্রেমে পড়েছি, বিয়ে করেছি। আমরা এখন সন্তানের মা–বাবা। এখনো আপনার গানের ভক্ত। আপনি ফিরে আসেন।” হাজারো মানুষ যখন ফিরে আসতে বলেন, তখন আর অভিমানের জায়গা থাকে না।’

কেন এই অভিমান
একবার বালামের ফ্যান পেজ হ্যাক হয়ে যায়। তখন নতুন করে পেজ চালুর আগ্রহ পাননি। মনে করেছিলেন, পিছিয়ে গেলেন। এরপর স্ত্রীও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সময়টাও বদলে যেতে থাকে, সিডি ক্যাসেট থেকে অনলাইনে চলে যায় গান। নতুন প্ল্যাটফর্ম সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব থেকে তখন দূরে বালাম। ভক্তদের জন্য একসময় ফেসবুক পেজ নতুন করে চালু করেন। বালাম বলেন, ‘আমি একটু অন্তর্মুখী ধরনের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতাম না। নতুন গান মুক্তি দিতে আগ্রহ পেতাম না। কিন্তু ভক্তদের সঙ্গে যেখানেই দেখা হতো, সবাই ফিরে আসতে বলতেন। তখন মনে হলো, অভিমান সরিয়ে ফিরব। কিন্তু গান করব না, এটা মাথায় কখনোই আসেনি। যত দিন প্রাণ থাকবে, তত দিন গান করে যাব।’

স্ত্রীকে নিয়ে ফেরা
মাস কয়েক আগে স্ত্রী সাগুফতা ফারুককে নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন—ভালোবাসা দিবসে কী করা যায়? ভালোবাসা দিবসেই তাঁদের প্রথম দেখা হয়। বালামের মনে হয়, ভক্তদের গান দিতে হবে।

বালাম
বালাম

যাঁরা নতুন প্রেমে পড়েন, তাঁদের অনুভূতি নিয়ে একটি গান তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল, কিন্তু শেষ করা হচ্ছিল না। একদিন স্ত্রীকে জানান, নতুন গান করবেন, সেই গানের মডেল হতে হবে স্ত্রীকেই! এভাবেই ভালোবাসা দিবসে ‘চুপচাপ চারিদিকে’ দিয়ে ফেরেন বালাম।

কথা দিলেন
ভক্তদের আর হতাশ করতে চান না বালাম, ‘কথা দিচ্ছি, আর কখনোই ভক্তদের কাছ থেকে হারাব না। যত দিন সুস্থ থাকি, নিয়মিত গান করে যাব।’ ফেসবুকে যে বালামকে পাওয়া যেত না, সেই বালামই কথা দিলেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকবেন। দীর্ঘদিন স্টেজ শো থেকে দূরে ছিলেন। এখন দেশে ও দেশের বাইরে থেকে একের পর এক শোর বায়না পাচ্ছেন। শিগগির শোতেও নিয়মিত হবেন। এই গায়ক আরও জানালেন নতুন উপলব্ধির কথা, ‘আগে যখন গান জনপ্রিয় হতো, তখন ভক্তদের সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানতে পারতাম না। কেবল স্টেজ শোতে গেলে বুঝতাম। এবার ফেসবুকে ভক্তদের প্রতিক্রিয়ায় বুঝলাম, ফেরার আনন্দ।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.