ধরাশায়ী মাখোঁর দল, কট্টরপন্থিদের বড় জয়

ফ্রান্সে প্রথম দফা সংসদ নির্বাচন

0
18
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও ডানপন্থী ন্যাশনাল র‌্যালি দলের নেতা মেরিন লে পেন। ছবি: সংগৃহীত

ফ্রান্সের সংসদ নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে মেরিন লে পেনের নেতৃত্বাধীন অতি কট্টরপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) দলটি বড় জয় পেতে যাচ্ছে। প্রাথমিক প্রাক্কলনে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর দল ভোটে তৃতীয় স্থানে নেমে যাচ্ছে। খবর বিবিসি, সিএনএন ও এএফপির।

আইপিএসওএসের প্রাথমিক প্রাক্কলনে আরএনের নেতৃত্বে কট্টরপন্থি জোট ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম স্থানে, বামপন্থি জোট ২৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে এবং মাখোঁর দল ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এ নির্বাচনে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে।

এতে মনে হচ্ছে, আগামী রোববার দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের পর ৫৭৭ আসনের জাতীয় পরিষদে আরএন ২৩০ থেকে ২৮০ আসনে জয়লাভ করবে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৮৯টি আসন।

সম্প্রতি গঠিত বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) ১২৫ থেকে ১৬৫ আসন পাবে। মাখোঁর এনসেম্বল এবং তার মিত্ররা ৭০ থেকে ১০০ আসন পেতে পারে। ফ্রান্সের ভোটার প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ।

মেরিন লে পেন তাঁর উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাচনী এলাকা হেনিন-বিউমন্টে উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘গণতন্ত্র কথা বলেছে এবং ফরাসিরা আরএন ও তার মিত্রদের শীর্ষে রেখেছে। জনগণ কার্যত মাখোঁ শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণ স্পষ্টতই সাত বছরের অবমাননাকর এবং ক্ষয়কারী শাসনের পরে পৃষ্ঠা উল্টাতে চায়।

মাখোঁ ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন এবং উচ্চ ভোটার উপস্থিতির প্রশংসা করেছেন। দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে তিনি ভোটারদের ‘‌প্রজাতন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক’ প্রার্থীদের ভোটদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ফ্রান্সের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর আশ্বাস দেওয়ার পরও দেশটিতে অভিবাসনবিরোধী এবং কট্টরপন্থি আরএন দলের প্রতি জনগণের সমর্থন বেড়েছে।

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন। তাঁর এ ঘোষণায় দেশটির অনেকেই হতবাক হন। এ ছাড়া ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

ইতোমধ্যে মাখোঁ বলেছেন, যে দলই জিতুক না কেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর বাকি মেয়াদ শেষ করবেন। ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ আছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ।

আগাম এই নির্বাচন নিয়ে ক্ষুব্ধ মাখোঁর মিত্ররা। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে ২০২৭ সালের আগে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থিদের অগ্রগতিতে শঙ্কিত হয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব রক্ষা করতেই আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন মাখোঁ।

আগের নির্বাচনগুলোতে ফ্রান্সের ভোটাররা কট্টর ডানপন্থি দলগুলোকে সামনে আসতে দেয়নি। কিন্তু এবার জ্বালানির দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ডানপন্থিদের দিকে ঝুঁকেছে দেশটির সাধারণ মানুষ। কারণ ডানপন্থিরা জ্বালানির ওপর ভ্যাট কমাতে এবং ৩০ বছরের কম বয়সীদের আয়কর থেকে মুক্তির আশ্বাস দিয়েছে।

বাইডেন

নতুন জরিপ দেখা গেছে, কিছু ডেমোক্র্যাট ভোটার নড়বড়ে বিতর্কের পারফরম্যান্সের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকভাবে উপযুক্ত কিনা, তা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

রোববার প্রকাশিত  সিবিএস নিউজ/ইউগভ জরিপে দেখা গেছে, ৭২ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার বিশ্বাস করে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার মতো মানসিক স্বাস্থ্য নেই বাইডেনের। আগের জরিপে একই কথা বলেছিল ৬৫ শতাংশ ভোটার। ৪৯ শতাংশ ভোটার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রে একই কথা বলেছে।

বাইডেনের প্রচারণার জন্য এটা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ ৪৫ শতাংশ নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট ভোটারও বলেছে, তারা বিশ্বাস করে, প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা থেকে বাইডেনের সরে যাওয়া উচিত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.