হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপ স্টক ও হিসাবের বিষয়ে জালিয়াতি করেছে। তাদের ভাষ্য, আদানি গ্রুপ ভুল তথ্য দিয়ে বাজারকে প্রভাবিত করেছে। এর মাধ্যমে তারা বাজারে নিজেদের শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে। এই প্রতিবেদনে প্রকাশিত হওয়ার পর রীতিমতো ঝড় বয়ে যায় আদানির সাজানো সাম্রাজ্যে।
এরপর আদানি গোষ্ঠী হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের পাল্টা জবাব দেয়। ভারতের করপোরেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও হিনডেনবার্গের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। আদানি গোষ্ঠী স্বাধীন নিরীক্ষা সংস্থা নিয়োগ দেয়। বাজারের আস্থা ফেরাতে সময়ের আগেই কিছু ঋণ পরিশোধ করে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। কার্যত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক দিন ব্যতীত বাকি সব দিনেই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারদর কমেছে।
২৫ জানুয়ারি ফোর্বসের তালিকায় গৌতম আদানি ছিলেন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী। তবে ব্লুমবার্গের তালিকায় তার অবস্থান ছিল চতুর্থ। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের তথ্যানুসারে, ২৫ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১৯ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ২৪ দিনে আদানির সম্পদমূল্য কমেছে ৬ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার। তাঁর মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠীর বাজার মূলধন কমেছে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের ওপর।
২০২০ সালেও গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ছিল ৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৮৯০ কোটি ডলার। এরপর উল্কার গতিতে বাড়তে থাকে তাঁর সম্পদমূল্য। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের অন্য অনেক শতকোটিপতির মতো গৌতম আদানির সম্পদও ফুলেফেঁপে ওঠে।
২০২১ সালে তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়ায় চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারে। আর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি যখন মুকেশ আম্বানিকে ছাড়িয়ে এশিয়ার তৃতীয় শীর্ষ ধনী হন, তখন তাঁর সম্পদমূল্য ছিল ৮ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার। এরপর একপর্যায়ে তিনি বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী হয়ে যান।
১৯৮০-এর দশকে ব্যবসা শুরু করা গৌতম আদানির মালিকানায় আছে সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানি। সেই সঙ্গে আছে কয়লা আমদানির অনুমোদন। আদানির নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশের বেশি কয়লা আমদানি করে।