‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’–এ একেবারে ভিন্নধর্মী একটি চরিত্রে হাজির হলেন মিথিলা। চরকিতে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজটিতে তাঁর করা শায়লা চরিত্রটি নিয়ে বেশ আলোচনাও হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, এটা মিথিলার দারুণ একটা ফিরে আসা। কেউ বা মনে করছেন, এটা মিথিলার টার্নিং পয়েন্ট। তবে মিথিলা মোটেও এমনটা ভাবছেন না। তাঁর মতে, অভিনয়ে বরাবরই তিনি অনিয়মিত। তাই ফিরে আসা বা টার্নিং পয়েন্টের মতো কিছু নয়। তবে ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ অভিনয় করে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি আলোচনায় তিনি।
এই মুহূর্তে কলকাতায় আছেন মিথিলা। গত মঙ্গলবার বিকেলে লেকগার্ডেনের বাসা থেকে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এত ভালো প্রতিক্রিয়া পাব, আশাই করিনি। খুবই ভালো। এককথায় চমৎকার। প্রতিদিনই কেউ না কেউ ফোন করছেন। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ ইনবক্সে মেসেজ পাঠাচ্ছেন। ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। তাঁদের কথায় মনে হচ্ছে, পুরো সিরিজই তাঁদের ভীষণ ভালো লেগেছে। শায়লা চরিত্রও তাঁদের মনে ধরেছে।’
মিথিলা বলেন, ‘এ ধরনের চরিত্র পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। একটা কাজের কথা যখন পরিচালক ভাবেন, মাথায় তখন অনেকেই থাকেন। অনেকের সঙ্গে কথাও বলেন। তেমনি আমার সঙ্গে কারও আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, সেই কাজ হয়নি। তাই বলছি, শায়লা চরিত্রটি আমার কাছে একদম দৈবক্রমে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে অভিনয়শিল্পী নিয়ে তো পরিচালকেরা ভাববেন। এবার যেমন শিহাব শাহীন ভাই ভেবেছেন বলেই হয়তো শায়লার মতো একটা চরিত্র পেয়েছি। এত বিচিত্র চরিত্রে আমাকে এর আগে কেউ ভাবেননি। সত্যি বলতে কি, ওই রকম চরিত্র পেলে যে কেউ শায়লা হয়ে উঠতে পারেন।’
এভাবে আমাকে আগে দর্শক কখনো দেখেননি: মিথিলা
পরিচালক শিহাব শাহীনের কাছে যখন গল্পটি প্রথম শোনেন, তখন মিথিলার মনে হয়েছিল, এটা তো অ্যালেন স্বপনের গল্প। এখানে শায়লার কী করার আছে? পুরো চিত্রনাট্য পড়ার পর দেখেন, শায়লারও অনেক কিছু করার আছে। পরিচালক অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। চিত্রনাট্য হাতে পাওয়ার পর পরিচালক প্রতি সপ্তাহে জানতে চাইতেন, চরিত্রটি নিয়ে কতটা ভাবছেন, কতটা হোমওয়ার্ক করছেন।’
কলকাতার পরিচিতজন, বিনোদন অঙ্গনের বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ দেখার পর মিথিলাকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গল্প নিয়েও তাঁদের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। এ রকম একটা অসাধারণ গল্পে যে কাজ করা যায়, তা ভেবেও তাঁরা বিস্মিত। সবাই যখন এভাবে প্রশংসা করছেন, তখন ঘরের মানুষ (সৃজিত মুখার্জি) কী বলছেন, জানতে চাইলে বলেন, ‘এখনো দেখার সময় পাননি। বোলপুরে শুটিংয়ে ব্যস্ত আছেন।’ সব সময় মিথিলার কাজ দেখে ভালো–মন্দ জানান, এবারও জানাবেন নিশ্চয়ই।
আগামীকাল শুক্রবার সপ্তাহখানেকের জন্য ঢাকায় আসবেন মিথিলা। চাকরি আর সংসারের কারণে বেশির ভাগ সময়ই এখন বিভিন্ন দেশে থাকতে হয়। মিথিলার মতে, বছরের অর্ধেকটা সময় তাঁকে বাংলাদেশের বাইরে কাটাতে হয়। এরপর সবকিছু সামলে পছন্দের গল্প পেলে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নাটক, ওয়েব সিরিজের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন মিথিলা। মূল ধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রেও কাজ করা হয়েছে।
মিথিলার জবাব কিসে?
‘অমানুষ’ নামের সেই চলচ্চিত্রেও কাজের অভিজ্ঞতা চমৎকার বলে জানান তিনি। মিথিলা বলেন, ‘অমানুষ’–এর গল্পটা আমার আরামদায়ক জায়গার একেবারে বাইরের। এ ধরনের কাজ করতে ভালোও লাগে।’ ঢাকা ও কলকাতায় মিথিলা অভিনীত আরও ছয়টি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলো হলো, ‘নুলিয়াছড়ির ‘সোনার পাহাড়’, ‘কাজলরেখা’, ‘জলে জ্বলে তারা’, ‘মায়া’, ‘মেঘলা’ ও ‘নীতিশাস্ত্র’।