গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, বর্তমান সরকার আরেকটি তামাশার নির্বাচন করতে চায়। আর তা বুঝতে পেরেই যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এই ভিসা নীতি সরকারের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে কী পরিস্থিতি হয়, তা গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে।
আজ রোববার রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট এলাকায় গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা উত্তরের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশ শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মালিবাগ রেলগেট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। বেলা ১টায় মেরুল বাড্ডায় গিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন নির্বাচন, সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে এই পদযাত্রা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির ঘোষণায় দুনিয়ার কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের মানসম্মান নষ্ট হয়েছে। সরকার বিদ্যুতের উৎসব করেছে। কিন্তু কয়লা না থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ডলার না থাকায় কয়লার দাম পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বাজারে দ্রব্যমূল্যের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এই সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। লোভ দেখিয়ে, ভাঙন ধরিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যুক্তরাষ্ট্র গায়ে পরে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করত না। এই সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। ক্ষমতায় থাকতে এই সরকার দেশের জনগণের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ভিসা নীতির কারণে নাকি বিরোধীরা বেকায়দায় আছে! সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভেসে যাবে আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে এই সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতায় আছে। সরকারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতি দেশের মানুষের মুখে চুনকালি মেখে দিয়েছে। এই ভিসা নীতি সরকারের নীতিনির্ধারকদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে। সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি তামাশার নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন মন খারাপ ও বুকে কষ্ট নিয়ে হাসিমুখ করে বলছেন, এই ভিসা নীতি বিরোধীদের জন্য। গাজীপুর সিটির বিরোধী দলহীন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে ঢাকা-দিনাজপুর লংমার্চের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ৪ মার্চ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হবে। ১২টি জেলা পার হয়ে ৭ মার্চ বিকেলে দিনাজপুরে লংমার্চ কর্মসূচি শেষ হবে।