দেশের প্রথম মনোরেল হবে চট্টগ্রামে, চুক্তি সই

0
25
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নির্মাণ হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম মনোরেল

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নির্মাণ হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম মনোরেল। ফলে নগরীর যানজট নিরসনে ও গণপরিবহন খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এটি। মনোরেল চালুর লক্ষ্যে এরই মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।

রোববার (১ জুন) সকালে নগরীর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ওরাসকম ও আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপের এ-সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি নগরীতে ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার একের পর এক চেষ্টার মধ্যে ছিল—এই শহরটাকে কীভাবে সুন্দর ও পরিকল্পিত করা যায়। কীভাবে যানজট কমানো যায়। আমরা ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়, স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম চালু, নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণসহ অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। তবে মনোরেল এই সমস্যাগুলোর একটি কার্যকর সমাধান হবে। প্রস্তাবিত মনোরেল প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার। এতে বিনিয়োগ হবে প্রায় ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। পুরো অর্থায়ন আনবে বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস। এই বিনিয়োগের জন্য চসিকের কোনো আর্থিক দায় থাকবে না। কেবল আমরা প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ও ভূমি বরাদ্দ দেবো।

চসিক মেয়র বলেন, এই মনোরেল শুধু যানজট নিরসনে নয়, বরং চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশবান্ধব, পর্যটন ও ব্যবসাবান্ধব নগরীতে রূপান্তরের দিকেও এগিয়ে নেবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সংযোগের একটি আধুনিক সেতুবন্ধন তৈরি করবে।

এ সময় চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, কক্সবাজারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকেও আন্তর্জাতিক রূপ দিতে হবে। কারণ চট্টগ্রামকে যদি নদী ও পাহাড়ঘেরা পর্যটন নগরী হিসেবে ভাবি, তবে একটি উন্নত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামকে একটি স্মার্ট ও টেকসই নগরীতে রূপান্তরের অংশ হিসেবে মনোরেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও নগরবাসীকে নিয়ে একটি ইকোনমিক ফোরাম গঠন করে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করবো।

মনোরেল প্রকল্পের অর্থায়ন, প্রযুক্তি ও বাস্তবায়ন কাঠামো তুলে ধরেন আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ কাউসার আলম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের সদস্য সচিব নাজির শাহীন প্রমুখ।

২০১৯ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রামে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হলেও তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। তবে মেট্রোরেল নয়, এবার মনোরেল চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে সিটি করপোরেশন।

২০২১ সালের ৮ জুন চট্টগ্রাম নগরীতে মনোরেল চালু করতে চসিককে প্রস্তাব দিয়েছিল চায়না প্রতিষ্ঠান উইটেক। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিনিধিদল ওইদিন টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে তৎকালীন মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রস্তাব দেয়। একই বছরের ১৯ মে মনোরেল চালুর প্রস্তাব করেছিল চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান উইহায় ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। মনোরেল ব্যবস্থায় ছোট ট্রেনগুলো সাধারণত মাটি থেকে উঁচুতে অবস্থিত একটি একক রেলপথ ধরে চলাচল করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.