দেরিতে বর্ষা নামলে বিশ্বে চাল সরবরাহে আসতে পারে ‘দুঃসংবাদ

0
95
বৃষ্টির অভাবে ভারতের আহমেবাদে ধানক্ষেত শুকিয়ে গেছে

দক্ষিণ এশিয়ায় আগামী মাসে বর্ষা শুরু হতে দেরি হতে পারে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত হতে পারে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত। এমনটি হলে তাপদাহ আরও বাড়বে। এতে বিশ্বের শীর্ষ সরবরাহকারী এ অঞ্চলে ধান উৎপাদন ব্যাহত হবে।

স্কাইমেট ওয়েদারের আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মহেশ পালাওয়াত বলেন, আমরা মনে করছি এবার বর্ষা দেরিতে হতে পারে। এজন্য বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। যদি বর্ষা নামতে চার থেকে পাঁচ দিন দেরি হয় তাহলে তাপমাত্রা কমবে না।

তিনি বলেন, যদি বর্ষা শুরু হতে দেরি হয় তাহলে বৃষ্টির ঘাটতি হতে পারে। ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম বিশ্বের শীর্ষ তিনটি চাল সরবরাহকারী হওয়ায় এই অঞ্চলের জলবায়ু বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন আবহাওয়ার চরম তাপপ্রবাহকে ৩০ গুণ বেশি করে তোলে। এপ্রিলের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অংশে রেকর্ড তাপমাত্রা দেখা দেয়।

এল নিনোর ঝুঁকিপূর্ণ প্রভাব সত্ত্বেও চলতি মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত আবহাওয়া সংস্থা। তবে বেসরকারি সংস্থা স্কাইমেট ওয়েদার বলছে, স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হতে পারে।

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে দুটি বিপরীত জলবায়ুর ধরন হলো এল নিনো ও লা নিনা। লা নিনা সাধারণত শীতল আবহাওয়া বয়ে আনে। এল নিনোর সময় আবহাওয়া গরম থাকে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু মডেলগুলো বলছে- এবার লা নিনার সময় জুনে এল নিনো ফিরে আসার আশঙ্কা বেশি।

ভারতের ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বোম্বের ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি এবং ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের ইমেরিটাস অধ্যাপক রঘু মুর্তুগুড্ডে বলেন, আমরা লা নিনা শীত থেকে এল নিনো গ্রীষ্মে রূপান্তরিত হচ্ছি। এই প্রবণতা খারাপ।

স্কাইমেটের পালাওয়াত বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্রমবর্ধমানভাবে বর্ষার বৃষ্টিপাতেও প্রভাব পড়ছে। এটি ফসলের উপর প্রভাব ফেলছে। এটি কৃষকদের জন্য উপকারী নয়। কারণ এটি ভূগর্ভস্থ পানিকে সংরক্ষণের জন্য সময় দেয় না। এছাড়া হঠাৎ বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এক দশক ধরে বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু গড়ে ওঠে যা পরবর্তীতে উত্তর-পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে চলে যায়। এতে ভারতের উত্তরের শস্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হয়।

দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন বলছে- আঠারো শ’ শতকের শেষের দিক থেকে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মানে হলো- বাংলাদেশ ও ভারতে তাপপ্রবাহের মতো ঘটনাগুলো এখন প্রতি পাঁচ বছরে ঘটতে পারে। যদি তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বেড়ে যায় তাহলে এই ধরনের ঘটনা অন্তত প্রতি বছর ঘটতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.