গ্রামীণ টেলিকমের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাত মামলায় নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৭ মিনিট থেকে ১১টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বের হন। এ সময় সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলেও তিনি প্রথমে কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। ষেখানে মামলার বিষয়ে তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন কথা বলেন।
তবে সাংবাদিকদের অনুরোধের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে ডেকেছে, আমি এসেছি। আমার বলার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, যেহেতু এটা আইনি বিষয়। আমার আইনজীবী এটার ব্যাখ্যা দেবেন।
এ সময় ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ মামলাটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে দুদকের তলবের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন তিনি।
গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদক মামলাটি করে চলতি বছরের ৩০ মে। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে তলব করে দুদক। মামলার চার্জশিট দেওয়ার আগে তদন্ত পর্যায়ে এ জিজ্ঞাবাসাবাদ করা হয়।
২৭ সেপ্টেম্বর প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এই চিঠিতে বলা হয়েছে, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্যদসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাত ও মানিলন্ডারিং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ৫ অক্টোবর সাড়ে ১২টায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানানো হলো।
দুদক জানায়, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুদকের কাছে অভিযোগ করা হলে আইন ও বিধিমোতাবেক অনুসন্ধান করা হয়। এতে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বোর্ড সদস্যগণের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের সত্যতা পাওয়ায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান; পরিচালক পারভিন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী; অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ; গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
এ মামলায় বুধবার দুদকে তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন– গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম ও এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী