শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

0
50
ভিকারুননিসায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে স্থায়ী বরখাস্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। রোববার দুপুরে লালবাগের পিলখানা রোডে স্কুলটির আজিমপুর শাখার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসব দাবি জানান তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, মুরাদ হোসেন তাদের সহপাঠীদের যৌন হয়রানি করে আসছেন বছরের পর বছর ধরে। কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পেত না। তারা এই শিক্ষককে তাদের স্কুলে দেখতে চান না। তারা নিরাপদ স্কুল চান।

অভিভাবকরা বলেন, মুরাদ হোসেনের মতো শিক্ষকের কাছে আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ নয়। এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। অথচ তাকে মূল শাখায় সংযুক্ত করা হয়েছে। তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে। একইসঙ্গে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

স্কুলের এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মুরাদ হোসেন সরকার ক্লাসে স্মার্টলি কথা বলতেন। মাঝে মধ্যে হেয়ালি করে কথা বলতেন, নানা ধরনের জোকসও বলতেন। আমরা সেটা ওইভাবে বুঝতাম না। তিনি প্রতি ব্যাচে একজন বা দুইজনকে টার্গেট করতেন। কোচিংয়ে তিনি টার্গেট করা শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের পরও নানা বাহানায় আটকে রেখে যৌন হয়রানি করতেন। অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে পারত না। আমরা মুরাদ হোসেন সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বিক্ষোভ কর্মসূচির এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন স্কুলের আজিমপুর শাখার (দিবা) ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ শাবনাজ সুলতানা কামাল। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমাদের দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে। মুরাদ হোসেন সরকারকে প্রিন্সিপালের দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এরপর শাবনাজ সুলতানা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে জানিয়েছে, মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়াতে এবং স্কুলের পরিবেশ শান্ত রাখতে তাকে এই শাখা থেকে সরিয়ে প্রিন্সিপালের অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‌‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমলে নিয়েছি। ভুক্তভোগী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছি।’

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘প্রত্যাহার নয় বরখাস্ত চাই, মুরাদ হোসেনের শাস্তি চাই’, ‘জেলে ভরা দরকার মুরাদ হোসেন সরকার’, ‘নিরাপদ স্কুল চাই, মুরাদ হোসেনের শাস্তি চাই’, ‘মুরাদের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় তারা নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এতে লেখা ছিল ‘আমরা খেলনা নই, আমাদের নিয়ে খেলবেন না’, ‘বাবার মুখোশে পিশাচ নিপাত যাক’, ‘বাবারা আদর করে মাথায় হাত দেন গায়ে না’, ‘এমন শিক্ষকরূপী নরপশুর পতন হোক’, ‘নিরাপদ স্কুল চাই মুরাদ হোসেনকে স্কুল থেকে বাদ চাই’, ‘নিপীড়কের ঠিকানা ক্লাসরুমে হবে না’, ‘আর কত নিষ্পাপ কিশোরী মুরাদের শিকার হবে?’ ইত্যাদি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.