দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের যমজ তিন ভাইবোন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বিরামপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিল তারা। তিন ভাইবোন লাসার সৌরভ মুরমু, মেরি মৌমিতা মুরমু ও মারথা জেনিভা মুরমু একসঙ্গে ভালো ফল করতে পেরে আনন্দিত। সন্তানদের সাফল্যে আনন্দিত জোহানেশ মুরমু ও সোহাগিনী হাঁসদা দম্পতি।
গতকাল শুক্রবার এসএসসির ফল ঘোষণা করা হয়। বিকেলে জোহানেশ-সোহাগিনী দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিন ভাইবোনের সাফল্যের খবরে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের ভিড় জমে গেছে। জিপিএ-৫ পাওয়া মেরি মৌমিতা মুরমু বলে, তারা তিন ভাইবোন ২০১৭ সালে বিরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিকের শিক্ষা সম্পন্ন করে। ২০১৮ সালে তিনজন বিরামপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বড় হয়ে সে চিকিৎসক হতে চায়। আরেক বোন মারথা জেনিভাও বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায়। তবে লাসার সৌরভ প্রকৌশলী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
মা সোহাগিনী হাঁসদা বলেন, ‘আমার কোলে যমজ তিন ছেলেমেয়ে আসার দিন বাড়িতেও আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। আজ তাদের ভালো রেজাল্টের খবরে বাড়িতে একই আনন্দ। আমি এসএসসি পাস। আমি আমার সামান্য জ্ঞান দিয়ে আমার তিন ছেলেমেয়েকে সাধ্যমতো পড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমার স্বামীর সামান্য আয়ে সংসার চলে। ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে, তাদের খরচ বাড়ছে। তাদের স্বপ্ন পূরণে ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করাতে অনেক খরচ লাগবে।’ তিনি মনে করেন, সরকার বা কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে তাঁদের সন্তানদের স্বপ্ন পূরণ হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পরিবার থেকে তিন যমজ ভাইবোনের এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া খুবই আনন্দের খবর। নতুন ইউএনও কাল রোববার যোগ দেবেন। কৃতী তিনজনের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে অবশ্যই উদ্যোগ নেওয়া হবে।