পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনে নানা অসংগতি

0
99
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনে নানা অসংগতি ও অনিয়ম ধরা পড়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে নিরীক্ষা (অডিট) আপত্তি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের ২০২২-২৩ নিরীক্ষাবছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও ২৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবসংক্রান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। জানা গেছে, নিরীক্ষা দল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি আর্থিক লেনদেনের ওপর নিরীক্ষা চালিয়েছে। প্রতিটি লেনদেনেই অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, গাড়ির জ্বালানি ক্রয় ও বই কেনাসহ বিভিন্ন খাতে এ টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, আপত্তিটি সাবেক উপাচার্যের আমলের। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাখ্যা দেবে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। এই অর্থবছরে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে অতিরিক্ত ব্যয় হয় ২ কোটি ৯০ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত এই অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে কোনো জবাব দিতে পারেননি। ফলে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

‘পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প’ নিয়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে একাধিক বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ ছিল ২৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছর বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। দুই অর্থবছরে বরাদ্দের অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। একইভাবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করায় চুক্তিমূল্য বৃদ্ধি করে ২৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

নিরীক্ষা আপত্তি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এটি সাংবাদিকদের জানার কথা নয়। যাঁরা নিরীক্ষা করেছেন, তাঁরা বিষয়টি তাঁদের জানিয়েছেন। তাঁরা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জি এম আজিজুর রহমান, পরিচালক, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প

প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন সরবরাহ ও পূর্তকাজ বাস্তবায়নের জন্য দুই কিস্তিতে ৬০ কোটি টাকা দিয়েছে। এ টাকা প্রকল্পের কাজে না লাগিয়ে অন্য দুটি ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরে সেখান থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি অব্যয়িত অর্থ জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা এড়ানোর জন্য এ অনিয়ম করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.