দক্ষিণ আফ্রিকায় চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে শামীম শিকদার (৪০) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টার দিকে দেশটির জোহানেসবার্গ শহরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ওই দেশ থেকে ছুটিতে বাড়িতে আসা শামীমের চাচাতো ভাই আবদুল জলিল শিকদার।
নিহত শামীম শিকদার মাদারীপুরের শিবচর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঠেঙ্গামারা এলাকার মো. আনিছ শিকদারের ছেলে। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ১৪ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান শামীম শিকদার। গত বছরের অক্টোবরে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে একটি মুদিদোকানের ব্যবসা চালাতেন তিনি। গতকাল রাতে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করতে তাঁর দোকানে আসে। এ সময় শামীম চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা শামীমকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় শামীমকে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আজ সকালে এই সংবাদ তাঁর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারে শুরু হয় মাতম।
শামীমের স্ত্রী সৈয়দা নাসিমা আক্তার বলেন, ‘আমার সন্তানেরা এতিম হয়ে গেল। আমরা এখন কীভাবে বাঁচব? আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল আমার স্বামী। পথে বসে গেলাম আমরা…।’
শামীমের বাবা আনিছ শিকদার আহাজারি করে বলেন, ‘শামীম আমার মেজ ছেলে। সাত মাস আগে শামীম ছুটিতে বাড়ি আসছিল। সর্বশেষ ছেলের লগে ফোনে ভালোই কথা হইল। ছেলে আমার শরীরের খোঁজখবর নিল। আজ শুনি, বাজানরে মাইরা ফালাইছে। বাজানে আর বাঁইচা নাই। এইটা তো হইতে পারে না। তোমরা আমার বাজানরে ফিরাইয়া আইনা দাও…।’
শামীমের প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শামীমের ছোট ছোট দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বাচ্চাগুলোর মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। পরিবারটির কথা ভেবে আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে। শামীমের লাশ দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আমাদের কাছে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে আমরা তা দেওয়ার সব ধরনের চেষ্টা করব।’