সিলেটের জকিগঞ্জ থানার হাজতের ভেন্টিলেটর ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর রাসেল আহমদ ওরফে রাসু (২৬) নামের এক চুরির আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাসেলকে জকিগঞ্জ পৌরসভার মাইজকান্দি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে রাসেল জকিগঞ্জ থানা হাজতের ভেন্টিলেটর ভেঙে পালিয়েছিলেন।
আসামি রাসেল আহমদ জকিগঞ্জ পৌরসভার বিলেরবন্দ এলাকার আলকাছ মিয়ার ছেলে। রাসেলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম বলেন, পুলিশের হেফাজত থেকে পালানোর ঘটনায় রাসেলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। জকিগঞ্জ থানায় হওয়া মামলার বাদী হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একটি চুরির মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি রাসেলকে বুধবার সকাল সাতটার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে জকিগঞ্জ থানাহাজতে রাখা হয়। সকাল ১০টার দিকে হাজত থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এ সময় হাজতের ভেন্টিলেটর ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। এর পর থেকে রাসেলকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁকে জকিগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বুধবার সকালে রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর থানাহাজতে রেখে যান জকিগঞ্জ পুলিশের রাতের দায়িত্ব পালন করা একটি দল। পরে দিনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সকাল ১০টার দিকে হাজতে গিয়ে তাঁকে পাননি। এ সময় ভেন্টিলেটর ভাঙা দেখতে পান। রাসেল এলাকায় ‘দুর্ধর্ষ সিঁধেল চোর’ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। তাঁকে এর আগেও গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। চুরির ঘটনায় বেশির ভাগ সময়ই রাসেল ভেন্টিলেটর বা সিঁধ কেটে প্রবেশ করতেন।
এদিকে হাজতের ভেন্টিলেটর ভেঙে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিমকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জকিগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াহিয়া আল মামুন ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (প্রশাসন) মো. জামশেদ আলম। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম মিয়া বলেন, রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর জকিগঞ্জ থানাহাজতে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। হাজত থেকে পালানোর ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।