চট্টগ্রামের রাউজানে দুই ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে মারধরের পর মৃত ভেবে নদীর চরে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাঁরা হলেন মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (৩২) ও সাজ্জাদ হোসেন (৩০)। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তবে তাঁদের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন গ্রামের বাঁধের গোড়ার মাঝের চর থেকে দুই ছাত্রদল নেতাকে উদ্ধার করা হয়। কর্ণফুলী ও হালদা নদীর মোহনার পাশে এই চর অবস্থিত। এ সময় তাঁদের হাত, পা ও মুখ বাঁধা ছিল। এর আগে বেলা একটায় নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে দুজনকে ১০-১২ জনের সশস্ত্র একটি দল অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়।
তুলে নিয়ে যাওয়া দুজনের মধ্যে জয়নাল আবেদীন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব ও সাজ্জাদ হোসেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। জয়নালের বাড়ি নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া এবং সাজ্জাদের বাড়ি কচুখাইন গ্রামে। রাজনৈতিক কারণে তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন বিএনপির নেতারা। তাঁরা দুজন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরিবারের সদস্য ও ইউপি কার্যালয়ে কর্মরত ব্যক্তিরা জানান, দুই ছাত্রদল নেতা জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে ইউপি কার্যালয়ে এসেছিলেন। ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল এসে দুজনকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। ওখানে চৌধুরীঘাট কূলে নিয়ে দুজনকে হকিস্টিক, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়। মারা গেছে ভেবে এই জায়গা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কচুখাইন গ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর মোহনায় থাকা মাঝের চরে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তবে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আহত ছাত্রদল নেতা মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের বাবা শওকত হোসেন বলেন, অপহরণকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীরা তাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণ চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় পিটিয়ে জখম করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।
রাউজান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন বলেন, ছাত্রদলের দুই নেতাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতার নির্দেশে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। এই হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ পর্যন্ত নোয়াপাড়া ইউনিয়নে অন্তত পাঁচবার হামলা, সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটে বিএনপির দুই পক্ষ কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে।