তিন সমন্বয়ককে সেফ কাস্টডিতে নিয়েছি, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিদ্ধান্ত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
52
প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আটক সমন্বয়কদের মধ্যে একজন তার বাবাকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘আমি আত্মগোপন করলাম, আপনারা আমি কোথায় আছি, জানাবেন না।’ এ রকম খবর যখন আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে পাই, তখন তাদের আমরা সেফ কাস্টডিতে নিয়েছি। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি, কারা তাদের আক্রমণ করতে চাচ্ছেন। এগুলোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে বিএনপি-জামায়াত, জঙ্গিরা সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। নরসিংদী জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট করে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে লুট করা অস্ত্র বিএনপি-জামায়াত, জঙ্গিরা পুলিশের দিকে ব্যবহার করেছে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, এখনও বহির্বিশ্বে বসে কিছু লোক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে উসকে দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এসব গুজবের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য প্রকাশ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় পুলিশ ও বিজিবি অনেক ধৈর্যসহকারে কাজ করেছে। ১৯ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে বিএনপি-জামায়াত, জঙ্গিরা পিবিআই অফিস, পাসপোর্ট অফিস, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পুলিশ বক্সসহ নানা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ২০ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের মা হাসপাতাল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, হাইওয়ে পুলিশের ব্যারাক, শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ বক্স আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া মদনপুর সার্কেল অফিসে হামলা, ৬ পুলিশকে পিটিয়ে গুরুতর জখম ও মদনপুর পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে অগ্নিসংযোগ, সদর থানা, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।

তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের মূল টার্গেট ছিল পুলিশ, সাংবাদিক এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা। দুইজন সাংবাদিকসহ কয়েকজন পুলিশকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। গাজীপুরের জনপ্রিয় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পিএসকে পিটিয়ে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে, তা-ও আপনারা দেখেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি তাদের সন্তানদের বয়স ইতোমধ্যে ৩০ এর ঊর্ধ্বে। সেই হিসেবে এখন মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৮ শতাংশ। আমরা মনে করেছিলাম- কোটা আন্দোলনকারী এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন থেকে সরে যাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তারা সেটি করেনি। এতেই প্রমাণ হয় আন্দোলনকারীদের হাতে আন্দোলন ছিল না।

তিনি আরও বলেন, জামায়াত-বিএনপি স্বাধীনতা চায়নি। তারা দেশকে অকার্যকর করার জন্য এবং দেশে জঙ্গিবাদ উত্থান ঘটানোর জন্য আন্দোলনের নামে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। আন্দোলনকারীরা তাদের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, ডিএমপির কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ অনেকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.