তিন বছরে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জিতব আমরা’

0
117
মেহেদী হাসান মিরাজ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব-তামিমদের পরের প্রজন্মের তারকা মনে করা হচ্ছে মেহেদী হাসান মিরাজকে। তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিন সংস্করণেই। ভালো খেলে অলরাউন্ডারের তকমাও পেয়ে গেছেন। ২৫ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারের স্বপ্ন জাতীয় দলে সাকিবের যোগ্য উত্তরসূরি হওয়া। মিরাজের বিশ্বাস তাঁদের হাত ধরেই তিন-চার বছরের মধ্যে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের কাছ থেকে জাতীয় দল এবং ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের গল্প শুনেছেন সেকান্দার আলী

মিরাজ: প্রথম দিকে একটু বসে ছিলাম। পারফর্মও করতে পারিনি। পরের দিকে আস্তে আস্তে ভালো হচ্ছিল। খেলার মধ্যেই তো আছি। একটু ক্লান্তও ছিলাম। সব মিলিয়ে ভালোই হয়েছে। শেষ ম্যাচটি ভালো হয়েছে, উইকেট পেয়েছি, ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলাম।

মিরাজ: সত্যি কথা বলতে, আমার ওয়ানডে বোলিং পুরো পরিবর্তন হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলে। উন্নতিটা হয়েছে ঢাকা লিগে। ঢাকা লিগ আমার কাছে অগ্রাধিকার ছিল। লিগে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে– ব্যাটসম্যানরা সব সময় মারার মুডে থাকে। সিঙ্গেলের চেয়ে বাউন্ডারি শট খেলার প্রবণতা বেশি থাকে। বোলাররা সতর্ক থেকে বোলিং করলে ভালো হয়।

মিরাজ: এ রকম উইকেট হলে সবার জন্যই চ্যালেঞ্জ। বোলার ও ব্যাটার– সবার জন্যই। দিন শেষে বোলাররা এখান থেকে শিখতে পারবে।

মিরাজ: তিন সংস্করণে খেলতে পারলে ভালো। সব ধরনের অভিজ্ঞতা থাকে। যেহেতু তিন সংস্করণে খেলছি, এটা আমার জন্য একটা বড় পাওয়া। প্রতিটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে নতুন কৌশলে খেলার অভিজ্ঞতা হচ্ছে। যেহেতু আগে টি২০ সংস্করণে সেভাবে খেলতাম না, সেদিক থেকে এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ। এক সংস্করণ থেকে আরেক সংস্করণে যেতে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। আমি এখন এটা বুঝতে পারি।

মিরাজ: এটা সত্য চ্যালেঞ্জ বেশি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেড়েছে। একটা জিনিস কী খেলার ভেতরে থাকলে পারফরম্যান্সটা রোল করে। দুই মাস হয়তো ভালো খেলবেন না পরের দুই মাস সুযোগ থাকবে। আমি মনে করি খেলার ভেতরে থাকলে সব সময় পারফর্ম করা যায়।

মিরাজ: আমি খেলাটা সব সময় উপভোগ করি। ব্যাটিং করতে ভালো লাগে। আলহামদুলিল্লাহ ব্যাটিংটা ভালো হচ্ছে। দল থেকেও আমাকে সাপোর্ট করে। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করা গেলে দলের ফল ভালো হয়। আমি ভারতের বিপক্ষে যে দুটি ইনিংস খেলেছি, ওই ম্যাচ দুটিতে কোনো আশাই ছিল না। আমি ব্যাটিং ভালো করায় দিন শেষে দল কিন্তু জিতেছে। আমরা পারফর্ম করি দলের জন্য। দল জিতলে সবার পারফর্ম হয়ে যায়। আমি ব্যাটিংয়ে অবদান রাখতে পারলে বাংলাদেশ জিতবে। ম্যাচ জয়ের হার বেড়ে যাবে। যেহেতু আমার ব্যাটিং স্কিল আছে, এটাকে নষ্ট না করে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

মিরাজ: মানসিকভাবে শক্ত হয়েছি। স্কিলে উন্নতি করেছি। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী কীভাবে খেলব, সেটা নিয়ে আগে থেকে অনুশীলন করেছি।

মিরাজ: আলাদা করা হয় না। যখন অনুশীলন থাকে, তখন ম্যাচ পরিস্থিতি মাথায় রেখে বোলিং বা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করি। নির্দিষ্ট স্কিল ধরে অনুশীলন করার চেষ্টা করি। যতটা দরকার, ততটাই করি।

মিরাজ: তিনি যখন আগে ছিলেন, সে তুলনায় এখন অনেক অভিজ্ঞ। আগেও আক্রমণাত্মক খেলার কথা বলতেন, এখন শুধু আক্রমণাত্মক খেলার কথাই বলেন না, পাশাপাশি ব্যাকও করেন। খেলোয়াড়দের সাপোর্ট করেন এবং করবেন বলেছেন। এটা খুব ভালো লাগে। কারণ একজন ক্রিকেটার আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে ফেল করতে পারে। খারাপ খেললেই বাদ দেওয়া হচ্ছে না। খেলোয়াড়রা জানে তার ভালো করার সুযোগ আছে। যেটা ক্রিকেটারদের সাহস দেয় ভালো করতে। টেকনিক্যালি এবং ট্যাকটিক্যালি কিছু জিনিস খুব ভালো বোঝান। খেলার ভেতরে কেউ ভুল করলে, সেটা ঠিক করে দেন। তিনি মানসিকভাবে অনেক সমর্থন দেন। স্কিল তো সবারই আছে। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কার মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এই চিন্তা বা পরিস্থিতি বুঝিয়ে দেওয়ায় হাথুরুসিংহে পারদর্শী।

মিরাজ: আমরা ধীরে ধীরে ভালো করছি। বিশ্বকাপের আগে আরও কিছু ম্যাচ খেলতে পারব। আমরা ক্যাম্প করতে পারব। ইংল্যান্ডে যাওয়ার আগে সিলেটে স্কিল ক্যাম্প আছে। ইংল্যান্ড গিয়েও ক্যাম্প হবে। পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে বিশ্বকাপকেন্দ্রিক। কোচ এবং অধিনায়ক এটা নিয়ে কাজ করছেন।

মিরাজ: অবশ্যই চাইব বিশ্বকাপে ব্যাটিং ও বোলিং– দুই বিভাগেই যেন পারফর্ম করতে পারি। ধারাবাহিকভাবে যেন ভালো করতে পারি। বিশ্বকাপ মঞ্চে যদি অনেক ভালো খেলি, সেটা বড় পাওয়া হবে আমার জন্য।

মিরাজ: আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেটাররা অনেক আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে এবং সাহস নিয়ে খেলছে। ভয়ডরবিহীন ক্রিকেট খেলছে। যখন যে রকম খেলা দরকার, সে রকম খেলছে। সবাই সমন্বিতভাবে খেলছে। প্রতিভাবান বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে, যারা পারফরম্যান্স করছে। সব মিলিয়ে সমন্বয়টা ভালো হচ্ছে।

মিরাজ: অবশ্যই। আমরা কখনও বড় টুর্নামেন্টে ট্রফি জিতিনি। আমাদের একটি ট্রফি জেতা দরকার। সেটা হতে পারে বিশ্বকাপ, হতে পারে এশিয়া কাপ। একটা ট্রফি আমরা জিততে পারলে দলের মানসিকতাই বদলে যাবে। আমরা অনেক দিন ধরে ভালো ক্রিকেট খেলছি। বিশ্বমানের ক্রিকেটার আছে দলে। এখন আমাদের এক-দু’জন খেলোয়াড়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না, আগে যেটা ছিল। এই দলে অনেক ক্রিকেটার আছে ম্যাচ জেতাতে পারে যে কোনো দিন। বিশ্বমানের একটি দলের ধারাবাহিকতা এটি। অবশ্যই সামনে একটি বড় ট্রফি জেতা প্রয়োজন।

মিরাজ: আমার মনে হয় তিন-চার বছরের মধ্যে আমরা যে কোনো একটি বড় ট্রফি জিততে পারব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.