তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ও জীবন রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার পক্ষে একমত পোষণ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি জানান, প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন শুধুমাত্র তামাকজনিত রোগে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে মন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ‘নারী মৈত্রীর’ একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তিনি এ আশ্বাসের কথা বলেন।
‘নারী মৈত্রীর’ তামাক নিয়ন্ত্রণে সকল ধরনের কার্যক্রমে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তামাক অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন তামাকজনিত রোগের কারণে। এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শুধু অবগত হলেই চলবে না, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের পদক্ষেপ যাতে বেগবান হয়, সেজন্য যার যার অবস্থান থেকে শক্ত অবস্থান নেয়া অতন্ত্য জরুরি।
এই ধরনের চমৎকার উদ্যোগের জন্য ‘নারী মৈত্রীকে’ ধন্যবাদ জানান তিনি।
মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে সংগঠনের সদস্যরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের গুরুত্ব এবং বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো-
*সকল ধরনের পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহণে ধূমপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা
*বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা
*তামাক কোম্পানির ‘কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা’ বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা
*বিড়ি-সিগারেটের সিঙ্গেল স্টিক বা খুচরা শলাকা ও মোড়কবিহীন বিক্রি নিষিদ্ধ করা
*ই-সিগারেট ও হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট (এইচটিপি) আমদানি ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা
*সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি (৫০% থেকে ৯০% এ উন্নিতকরণ) ও প্লেইন প্যাকেজিংসহ তামাকজাত দ্রব্য
*মোড়কজাতকরণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম প্রণয়ন করা।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি জানান, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ীরা মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এর ভুক্তভোগী। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশুর উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে, রেস্তোরাঁসহ সকল পাবলিক পরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা গেলে, সেখানে আগত অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৫% পর্যন্ত হ্রাস পাবে। শ্বাসতন্ত্র ভালো থাকবে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। মৃত্যুর এই ভয়াল ছোবল থেকে বেরিয়ে আসতে নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই।