দীর্ঘ সময় পর্দা থেকে দূরে কেন?
গত বছর কোরবানি ঈদের পর যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। দেশের ফেরার পর চরকির ওয়েব সিরিজ ‘মারকিউলিস’ নিয়ে দীর্ঘ সময় ব্যস্ত থেকেছি। তখন আমি একটা কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। এ জন্য গ্যাপ পড়েছিল। প্রথম ওটিটির কাজে ছাড় দিতে চাইনি। যে কারণে এই প্রথম ভালোবাসা দিবসেও কোনো কাজ করিনি। আমিও চেয়েছি একসঙ্গে অনেক কাজে না করতে। সিরিজ শেষ করে এখন ঈদের নাটক নিয়ে টানা ব্যস্ত থাকব।
ঈদের কয়টি নাটকে দেখা যাবে?
‘আপসহীনা’, ‘বিরতিহীন যাত্রা’, ‘জ্যোৎস্নাহারা’সহ ১২টি নাটক হতে পারে। কিছু আগে শুটিং করা। আগের মতো বেশি গল্পে কাজ করিনি। তবে ভিন্নতা রাখার চেষ্টা করেছি।
কী ভিন্নতা?
গত বছর ঈদের নারীকেন্দ্রিক ‘নিজস্ব প্রতিবেদক’সহ বেশ কিছু কাজ থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছিলাম। এবারও চেষ্টা করেছি রোমান্টিক ও কমেডির বাইরে নারীভিত্তিক গল্পগুলোকে প্রাধান্য দিতে। নারীদের এমন অনেক গল্প আছে, যেগুলো আমরা দেখি কিন্তু বলা হয় না। যেগুলো নারীদের কথা বলে। যেমন ‘পারুলকথা’য় মোটাদাগে উঠে এসেছে প্রবাসী নারী শ্রমিকের না বলা গল্প। ‘আপনহীনা’তে একজন উচ্চপদস্থ নারী কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছি। ‘মিস বার্বারে’ একজন নারী নাপিতের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এ সব চরিত্রই ছিল চ্যালেঞ্জিং। দারুণ সব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
কেমন অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন?
‘পারুলকথা’ নাটকের জন্য বাসে, বস্তিতে শুটিং করেছি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসে দৃশ্যধারণ করছিলাম। চরিত্রটির বেশভূষা এমন ছিল যে সেই সাজে কেউ চিনতেই পারেনি। আবার আরেকটা দৃশ্যে বিমানবন্দর এলাকা দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ আমি পড়ে যাই। অনেকেই হেল্প করতে এগিয়ে আসে। কিন্তু তাঁরাও সাবিলাকে চিনতে পারেননি। তবে বাসে আমাকে দেখে কেউ কেউ অবাক হয়েছিলেন। তাঁরা বলছিলেন, আপনি সাবিলা না? এখানে কী করছেন? সব মিলিয়ে মজার অভিজ্ঞতা।
সম্প্রতি আপনার একাডেমিক ফল বেরিয়েছে। ফেসবুকে অনেকে আপনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ইংরেজি সাহিত্যে পড়েছেন। অভিনয়ের ওপর পড়াশোনার কোনো প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন?
অভিনয়ের জন্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনেক। চরিত্রকে ঠিকমতো মেলে ধরতে আমাদের পড়াশোনা করতে হয়, জানতে হয়। ‘মারকিউলিস’–এর থিম নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে। অভিনয় নিয়ে অনেক স্টাডি করতে হয়। নাটকের ক্ষেত্রে হয়তো সেটা কিছুটা কম হয়। কিন্তু অভিনয়ের ওপর একাডেমিক পড়াশোনা করব কি না, এখনো কিছু ভাবছি না। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী হয়।
জীবন চলার পথে কোনো কথাগুলো স্মরণে রাখেন?
নিজের কাজের প্রতি সৎ থাকা। যখন যেটা করছি সেটার প্রতি শতভাগ ডেডিকেশন যেন থাকে, সেটা সব সময় মাথায় থাকে। ব্যক্তিগতভাবেও সৎ থাকার চেষ্টা করি।
আপনার সহকর্মীদের মধ্যে সিয়াম, তৌসিফসহ অন্যরাও আপনার প্রশংসা করেন। সবাই আপনার প্রশংসা করার কারণ কী?
হা হা…আমি সব সময় চেষ্টা করি, নিজের ক্যাপাসিটির মধ্যে সবার পাশে থাকতে। আর সব সময় চেষ্টা করি, শুটিং ছাড়া নিজের মতো থাকার। আমার মনে হয়, নিজের মতো থাকলে কারও কোনো শক্র হয় না।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ভালো ফলাফল থাকা সত্ত্বেও অনেকের কাছ থেকে শুনতে হয়েছিল, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খারাপ করার কারণে আপনাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। সেই স্ট্যাটাসে অভিনেত্রী অপি করিম মন্তব্য করে আপনার পাশে দাঁড়িয়েছেন…
অপি করিম আপুর সঙ্গে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। কম কথা বলার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকবার দেখা হয়েছিল। হঠাৎ অপি আপু এভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সবকিছুকে ইগনর করে স্বপ্নের সামনে এগিয়ে যেতে বলেছেন। তাঁর মন্তব্য আমার কাছে অনেক কিছু। কারণ, আমাদের জেনারেশনের অনেকের কাছে অপি করিম আইডল। সেটা অভিনয় বা শিক্ষা সব দিক দিয়েই। তাঁর কাছে থেকে এমন মন্তব্য পাওয়া আমার জন্য অন্য রকম প্রাপ্তি।
আপনাকে মাঝে মাঝে ফেসবুকে রিল বানাতে দেখা যায়…
হা হা…নিয়মিত করার সময় পাই না। দেখা যায়, একটু সময় পেলেই করি। তবে ভক্তরা অনেক পছন্দ করেছেন বুঝছি। হয়তো তাঁদের জন্যই আবার রিল করব।
সাবিলার সংসার কেমন চলছে?
বিয়ে করেছি, সংসারের দায়িত্ব পালন করছি। অনেক ছোট থেকেই কাজ করছি। পরিবারের মা–বাবা, ভাই–বোন অনেক সাপোর্ট করেছেন। এখন বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির পরিবারেও সবাই সহযোগিতা করেন। যে কারণে অনেক বেশি কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। এসব কারণেই ভালোভাবে কাজ করতে পারছি।