তত্ত্বাবধায়ক নয়, বিচারপ‌তির নেতৃ‌ত্বে জাতীয় সরকার চান চর‌মোনাই পীর

0
164
‘রাজনৈতিক সংকট উত্তরণ এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে করণীয়’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা।

ইসলামী আন্দোলনের আমির তথা চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, নিবন্ধিত সব দ‌লের সমন্ব‌য়ে জাতীয় সরকা‌র গঠন করতে হবে। সেই সরকারের প্রধান হবেন আপিল বিভাগের একজন বিজ্ঞ, সৎ ও গ্রহণযোগ্য বিচারপতি। তবে দলীয় সরকা‌রের অধী‌নে আর কোনো নির্বাচ‌নে অংশ নে‌বে না ইসলামী আন্দোলন।

শনিবার রাজধানীর এক‌টি হো‌টে‌লে ‘রাজনৈতিক সংকট উত্তরণ এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে করণীয়’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এসব কথা ব‌লে‌ন চর‌মোনাই পীর।

মত‌বি‌নিময় সভায় আওয়ামী লীগ বা‌দে নিবন্ধিত অধিকাংশ দল‌কে আমন্ত্রণ জা‌নায় ইসলামী আন্দোলন। বিএন‌পি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় পা‌র্টির মহাস‌চিব‌ মু‌জিবুল হক চুন্নু‌কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। ত‌বে তারা আসেননি। বিএনপির প‌ক্ষে দল‌টির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সভায় যোগ দেন। জাতীয় পা‌র্টির কেউ সভায় আসেনি। ত‌বে, বি‌রোধীদলীয় নেতা রওশন এরশা‌দের রাজনৈ‌তিক স‌চিব গোলাম ম‌সিহ মত‌বি‌নিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতে ইসলামী‌কে দলীয়ভা‌বে আমন্ত্রণ জানানো না হ‌লেও দল‌টির কেন্দ্রীয় কর্মপ‌রিষদ সদস্য খলিলুর রহমান মাদানী‌কে দাওয়াত দেওয়া হয়। তি‌নি যোগ দেন মত‌বি‌নিময় সভায়।

মতবিনিময় সভায় বিএন‌পি নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকা‌রের দা‌বি তুলে ধরেন। ত‌বে, চর‌মোনাই পীর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করেন। তি‌নি বলেন, বিশেষ প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তু‌লে‌ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বিএন‌পিও কারচু‌পির অভিযোগ তোলে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না, নিরপেক্ষও হয় না।

জাতীয় সরকারের রূপরেখা তু‌লে ধ‌রে চরমোনাই পীর রেজাউল করীম ব‌লেন, আপিল বিভাগের একজন বিজ্ঞ, সৎ ও গ্রহণযোগ্য বিচারপতিকে প্রধান করে নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হবে। যারা জাতীয় সরকারে থাকবেন, তারা নির্বাচনে অংশ নি‌তে পার‌বেন না। সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। বর্তমান মন্ত্রিসভার কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না। তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচনের আ‌য়োজন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।

চর‌মোনাই‌ পীর আরও ব‌লেন, আগামী সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে আয়োজনের পাঁয়তারা চলছে। মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে। আগেও বলেছি, এখনও বলছি– দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনেই ইসলামী আন্দোলন অংশ নেবে না।

মতবিনিময় সভায় আরও যোগ দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মনজু, মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, খেলাফতে রব্বানী পার্টির চেয়ারম্যান মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.