হল থেকে বের করে দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্যার এ এফ রহমান হলের ২য় বর্ষের ছাত্ররা। বুধবার (১৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের আশ্বাসে রাত ২টা ৪০ মিনিটে সেখান থেকে সরে যান বিক্ষোভরত ছাত্ররা।
বিক্ষোভরত ছাত্ররা জানান, ঢাবির স্যার এ এফ রহমান হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ৪৩ জন ছাত্র থাকেন। কক্ষটিতে চার জনের জায়গায় সর্বোচ্চ আট জন থাকা সম্ভব। অথচ সেখানে থাকেন ৪৩ জন শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, ওই কক্ষে থাকার জন্য তাদের নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়া, গেস্টরুমসহ নানা নির্যাতন ও অপমান সহ্য করতে হয়। তাই ক্ষোভ থেকে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
ছাত্ররা বলছেন, এ এফ রহমান হলের ওই কক্ষটি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের নিয়ন্ত্রণাধীন।
অবস্থানরত ছাত্ররা আরও বলেন, নিয়মিত ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করা সত্ত্বেও তাদের একটা রুম দেওয়া হচ্ছে না। সমস্যার কথা জানালে তারা (ইমিডিয়েট সিনিয়র) বলেন, ‘তোরা পচে মর, আমাদের সমস্যা নাই।’ পাঁচ মিনিটের আল্টিমেটামে তাদের হল থেকে বের করে দিয়েছে। জিনিসপত্র নেওয়ার সময়ও দেওয়া হয়নি।
ছাত্ররা বলেন, ‘আমরা মাথা গোঁজার জন্য একটু ঠাঁই চাই। অনেকের কাল (আজ) পরীক্ষা আছে। কয়েকজন অসুস্থ ছিল, তাদের ধরে ধরে বের করে এখানে নিয়ে আসছি।’
এ সময় ‘দাবি মোদের একটাই— মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই’, ‘থাকার জন্য জায়গা চাই— দাবি মোদের একটাই’, ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি— মানতে হবে, মানতে হবে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া ছাত্রদের।
রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান। তার আশ্বাসে অবস্থানরত ছাত্ররা হলে ফেরত যান।
এ সময় ওয়ালি আসিফ ইনান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অবস্থানের বিষয় জানতে পেরে এখানে এসেছি। আমি শুনেছি এফ রহমান হলের কিছু শিক্ষার্থীর আবাসন নিয়ে কোনো সমস্যা হয়েছে। এজন্য তারা উপাচার্যের বাসার সামনে এসে নিজেদের কষ্টগুলো প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রনেতা হিসেবে তাদের সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে চেষ্টা করি। আমার বিশ্বাস আমি সমাধান করতে পেরেছি। আমি ওদের বুঝিয়ে এই রাতে যাতে রাস্তায় কষ্ট করতে না হয় সেজন্য হলে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ওরা হাসিমুখে সবাই হলে ফিরে গেছেন।’