ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেকে নিয়ে মারধর, বন কর্মকর্তার মৃত্যু

0
190
শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে বসন্ত কুমার নামের ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মারধরের শিকার বন বিভাগের এক কর্মকর্তা মারা গেছেন। তাঁর নাম বসন্ত কুমার দাস (৫২)। তিনি রাজধানীর মহাখালীতে বন ভবনে হিসাব বিভাগে কর্মরত ছিলেন বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

আগের দিন শনিবার রাতে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় বসন্তকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেকে নিয়ে মারধর করেন বলে তাঁর পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছে। নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই হেমন্ত কুমার দাস আজ রাতে বলেন, দূর সম্পর্কের এক ফুফাতো বোনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা বলতেন বসন্ত কুমার দাস। এর জেরে তাঁর স্বামী শান্তি মণ্ডল গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বসন্তকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ডেকে নিয়ে যান। এরপর কলাভবনের সামনে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি, চড়থাপ্পড় দেন।

বসন্তকে মারধরের পর শান্তি মণ্ডলই তাঁদের ফোন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেতে বলেন বলে জানান হেমন্ত কুমার দাস। তিনি বলেন, ফোন পেয়ে বসন্তের স্ত্রী ও তাঁদের আরেক ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা বসন্তকে পুলিশের জিম্মায় পান। তখন পুলিশের কাছ থেকে বসন্তকে নিয়ে বাসায় ফেরেন।

হেমন্ত কুমার দাস বলেন, মালিবাগের গুলবাগের বাসায় ফিরে রাতেই তাঁর ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে আজ সকালে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান তিনি।

পরিবারের সদস্যরা যে পুলিশ সদস্যদের কাছে বসন্তকে পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুকুমার দত্ত ছিলেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল রাতে তিনিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছিলেন। একপর্যায়ে একটি জটলা দেখে এগিয়ে যান। সেখানে এক ব্যক্তিকে ঘিরে ধরেছিলেন লোকজন। কথা বলে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি বসন্ত কুমার দাস। শান্তি মণ্ডলের সঙ্গে তিনি রিকশায় ছিলেন। হঠাৎ রিকশা থেকে লাফিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন ধাওয়া করে তাঁকে ধরে ফেলেন শান্তি মণ্ডল। বসন্ত কুমার দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মারধরের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বসন্তকে মারধরের ঘটনায় যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই শান্তি মণ্ডল ঢাকার ইস্কাটন এলাকায় থাকেন বলে জানান হেমন্ত কুমার দাস। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, শান্তি মণ্ডল একজন ব্যবসায়ী। এর বাইরে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।

ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে হেমন্ত কুমার দাস জানিয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আজ সকাল নয়টার দিকে বসন্ত কুমার দাসকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের তাঁর মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.