গাজা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে একে অপরের প্রস্তাবে ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

0
91
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, ফাইল ছবি: রয়টার্স

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা নিয়ে কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে রক্তপাত বন্ধের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পরপর দুটি প্রস্তাব (রেজল্যুশন) উত্থাপন করা হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগে কোনোটিই গৃহীত হয়নি।

বৈঠকে শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে গাজায় ‘মানবিক বিরতির’ কথা বলা হয়। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের নাম উল্লেখ না করে বলা হয়, সব দেশের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী অপর দুই সদস্যদেশ রাশিয়া ও চীন। তারা এতে ভেটো দেয়। এ ছাড়া প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় অস্থায়ী সদস্যদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

চীন ও রাশিয়ার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়নি। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও হামলার বিষয়ে প্রস্তাবটিতে সবুজসংকেত দেওয়া হয়েছে। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, মার্কিন খসড়া প্রস্তাবে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জীবনকে একই চোখে দেখা হয়নি।

তবে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, আলবেনিয়া, ইকুয়েডর, গ্যাবন, ঘানা, জাপান, মাল্টা ও সুইজারল্যান্ড। ব্রাজিল ও মোজাম্বিক ভোটদানে বিরত ছিল।

এরপর নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরেকটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে গাজায় অবিলম্বে মানবিক কারণে ‘যুদ্ধবিরতির’ দাবি জানায় মস্কো। এ প্রস্তাবও যথেষ্ট সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়।

রুশ প্রস্তাবটিতে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। পক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও গ্যাবন। আর ভোটদানে বিরত ছিল ফ্রান্স, আলবেনিয়া, ব্রাজিল, ইকুয়েডর, ঘানা, জাপান, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড ও মোজাম্বিক।

এর আগেও গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার একটি এবং ব্রাজিলের একটি খসড়া প্রস্তাব বাতিল হয়েছিল।

নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদেশ পাঁচটি—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়া। রয়েছে অস্থায়ী ১০ সদস্য। সবার ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তবে যেকোনো প্রস্তাব পাসে স্থায়ী পাঁচ সদস্যের সবার সম্মতির দরকার হয়। কোনো একটি স্থায়ী সদস্যদেশ ভেটো দিলে প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরপরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েল সরকারের তথ্য, হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আটক করা হয়েছে ২২২ ইসরায়েলিকে।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। গত মঙ্গলবার এক দিনেই প্রাণ গেছে সাত শতাধিক মানুষের। জাতিসংঘের হিসাবে, এ পর্যন্ত গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.