ঈদকে সামনে রেখে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের কয়েকগুণ চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এই মহাসড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রায় ২২ টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। সাধারণ প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে এই মহাসড়ক দিয়ে। ঈদের ছুটিতে তা বেড়ে দাড়ায় ৫০ থেকে ৬০ হাজারে। এত বিপুল সংখ্যক গাড়ির চাপে টোলপ্লাজা মাঝে মধ্যেই বন্ধ রাখতে হয়। ফলে গাড়ির সাড়ি দীর্ঘ হয়ে ব্যপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে মোট যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৯ হাজার ৮৫টি। আর টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৬৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা। তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বে পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৬টি যানবাহন ও টোল আদায় হয় এক কোটি ২৬ লাখ ৪১ হাজার ১৫০ টাকা এবং সেতু পশ্চিম অংশে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৮৮১টি ও টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার ১৫০ টাকা। এদিকে সময়ের সাথে সাথে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের যানবাহন চলাচল করছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল পাভেল বলেন, ঈদে স্বাভাবিকের তুলনায় তিনগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও গরুবাহী ট্রাকতো থাকছেই। সেতুর পশ্চিম পাশে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চালাতে না পারায় সেতুর পূর্বদিকে যানজট হয়। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিকঠাক থাকলে যানজটে যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না। আজ থেকে ঈদ যাত্রায় যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যানজট এড়াতে সেতু পূর্ব ও পশ্চিমে মোট ১৮টি বুথে টোল আদায় করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, গত রোজার ঈদে মহাসড়কে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক একমুখী (ওয়ানওয়ে) করে দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর দিকে যেত। অপরদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হয়ে ভূঞাপুর লিংক রোড ব্যবহার করে এলেঙ্গা হয়ে ঢাকা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে মহাসড়কে গাড়ির চাপ কমে অনেকটা সুফল মিলেছিল। অনেক বছর পর গত ঈদুল ফিতরে মহাসড়কে যানজট হয়নি। এবারও মহাসড়কের ওই অংশটুকু যানবাহনের জন্য একমুখী করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে বাস ভুঞাপুর লিংক রোড ব্যবহার করে এলেঙ্গা হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে। আর গরুবাহী ট্রাক সেতু থেকে সরাসরি এলেঙ্গা হয়ে ঢাকা যাচ্ছে। আশা করছি গত ঈদুল ফিতরের মতো এবারও কোন যানজট হবে না। ঈদে ঘরমুখী মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলারসহ ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন বিহীন যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। মহাসড়ক ও সেতুর উপর কোনো যানবাহন বিকল হলে তাৎক্ষণিক সেতু কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের রেকারের মাধ্যমে তা অপসারণ করা হবে। যানজট নিরসনে পুলিশ সর্বাত্বক কাজ করছে।