ঢাকাসহ দেশের সব মহানগরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সমাবেশ করবে আজ। পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগও। একদিকে সমাবেশের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ সাংগঠনিক বিভাগে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে বিরোধী জোটের এ কর্মসূচির দিন ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ‘সম্ভাব্য সন্ত্রাস-নৈরাজ্য’ ঠেকাতে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকবেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাঠে থাকলেও বাধা দেবে না আওয়ামী লীগ: বিএনপি ও তার মিত্রদের সমাবেশ কর্মসূচির বিপরীতে আজ শনিবার সারাদেশের মহানগর পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরের দুই প্রান্তে পৃথক সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতিও শেষ করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে বিরোধীদের কর্মসূচিতে তাঁরা কোনো বাধা দেবেন না বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি ও তার মিত্রদের আন্দোলন কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য নৈরাজ্য ও সংঘাত-সহিংসতা ঠেকাতে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠে রয়েছেন তাঁরা। বরাবরের মতো আজও রাজপথে শান্তি সমাবেশ করবেন তাঁরা। পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে থাকবেন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে সরকারবিরোধীদের আজকের সমাবেশ কর্মসূচি পালনকালে কোনো ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দেওয়া মাত্রই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন নেতাকর্মীরা। মোট কথা, বিএনপি ও তার সহযোগীদের কোনো অবস্থায়ই দেশের কোথাও কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট মহানগর কমিটির সুবিধামতো সময়ে সমাবেশগুলো হবে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ব্যানারে আলাদা দুটি সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ হবে দুপুর আড়াইটায় মিরপুরের ভাসানটেক মোড়ে। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভা হবে বিকেল ৩টায় ধোলাইখাল কাজী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে। দুই কর্মসূচিতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
নয়াপল্টনে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি বিএনপির: ঢাকাসহ সারাদেশে মহানগরে বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ করবে আজ। রোজার আগে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। রাজধানীর নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে লোকসমাগম বাড়াতে কাজ করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন এবং দলসমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনেরও রয়েছে প্রস্তুতি। বড় শোডাউন করতে পারেন দলটির নেতাকর্মীরা। একযোগে এদিন সমমনা আরও ৫৩টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন একই কর্মসূচি পালন করবে।
বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো ও দমন-নিপীড়ন বন্ধ এবং খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীর মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে এ সমাবেশ হবে। সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির ঢাকা মহানগরের উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক জানান, রোজার আগে দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস নিয়ে মানুষের মধ্যে হাহাকার চলছে। এখন পরিবর্তনের জন্য বিএনপির চলমান আন্দোলন আর দলের নেতাকর্মীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, জনগণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
অন্যান্য দল ও জোট: গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক জোট সরকারের পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে এই প্রতিবাদ সমাবেশ তাদের মধ্যে দশম। সকাল ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ পল্টন মোড়ে, ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পল্টনের আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে, গণফোরাম-পিপলস পার্টি আরামবাগে গণফোরাম চত্বরে সমাবেশ করবে।