রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা ইমদাদ উল্লাহ। ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য গাবতলী পশুর হাট থেকে মাঝারি আকারের একটি গরু কেনেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইমদাদের সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি হাটের হাসিল আদায় কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এ বছর হাটে গরুর দরদাম নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে ইমদাদ উল্লাহ বলেন, ‘বিক্রেতা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম চেয়েছিলেন। গরুটি পছন্দ হওয়ায় দেড় লাখ টাকা দাম বলি। পরে আরও ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বনিবনা হয়।’ বাজারে গরুর দাম স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর হাটগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল থেকে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। গতকাল হাট শুরুর প্রথম দিন বিকেলে গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রথম দিনের তুলনায় হাটে গরু-ছাগল বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন হাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও হাটে কোরবানির পশু আনা বিক্রেতারা। ক্রেতারাও দাম নিয়ে তাঁদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী হাটের নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে ইট-বালু বিক্রির জায়গাতেও (গদি) ত্রিপলের ছাউনি ও প্যান্ডেল খাটিয়ে গরু রাখা হয়েছে। সারা দেশ থেকে গরু নিয়ে আসা পাইকার, ব্যবসায়ী ও খামারিরা নিজেদের গরু এসব ছাউনির নিচে বেঁধে রেখেছেন। হাটে প্রবেশের মূল ফটকে ক্রেতাদের সমাগম দেখা গেছে। কেউ পছন্দের গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন, কেউ আবার কোরবানির পশু কিনতে হাটে ঢুকছিলেন।
বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টায় শতাধিক ক্রেতাকে পছন্দের পশু কিনে ওই ফটক দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব গরু ৭২ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে কিনেছেন বলে জানালেন ক্রেতারা।
মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা বাবুল খন্দকার পছন্দের খাসি কিনে হাসিল ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর ভাই সেলিম খন্দকার হাসিল জমা দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। সঙ্গে ছিল বাদামি রঙের মাঝারি আকারের চেয়ে কিছুটা বড় আকারের একটি খাসি। দাম জানালেন ২৩ হাজার টাকা।
বাবুল খন্দকার বলেন, ‘প্রথমে গাবতলী হাটে এসেছি। এখানে এসেই এই খাসি আর এর দাম পছন্দ হয়ে গেছে। তাই দেরি না করে কিনে ফেলেছি।’ এরই মধ্যে হাসিল পরিশোধ করে পাশে এসে দাঁড়ালেন বাবুলের ভাই সেলিম। ভাইকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘সুযোগ থাকলে আজকেই গরুটাও কিনে ফেললে ভালো হতো।’
সিরাজগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী আলতাফ মিয়া জানালেন, এবার তিনি মোট ২৪টি গরু হাটে এনেছেন। তিনি রোববার রাতে হাটে পৌঁছান।
গতকাল বিকেলে তাঁর তিনটি গরু বিক্রি হয়েছে। এর একটি ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। অন্য দুটির একটি ১ লাখ ৩০ হাজার, অপরটি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।