সরকার সুষ্ঠুভাবে আগামী নির্বাচন করতে চায়, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী

0
87
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের ক্লারিজ হোটেলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারও বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন যুক্তরাজ্যের মতো অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চায়। এ লক্ষ্যে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করছেন।

যুক্তরাজ্যের ক্লারিজ হোটেলে গতকাল শনিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলির সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আমার দল সব সময় দেশে গণতন্ত্র বজায় রেখেছে। আমরা দেশের গণতন্ত্রকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি দিয়েছি।’

আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের বিষয়ে বৈঠকে কথা বলেন। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমি সবার সহযোগিতা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করেছে। কেউ যাতে নির্বাচনে কারচুপি করতে না পারে, সে জন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তৈরি করা হয়েছে। উল্টো বিএনপি ভোট কারচুপির জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার যুক্ত করে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট স্বাধীন ও শক্তিশালী করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তাঁরা ওয়েস্টমিনস্টারের আদলে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, যার অনুসরণে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও জলবায়ু, ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনায় এসেছে। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য।

আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে একটি বিল তুলেছে। রেজল্যুশন পাস করতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।

আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডনে এলে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এর পর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

জেমস ক্লিভারলি বলেন, বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর হয়েছে। দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে, এ সম্পর্ক ততই জোরদার হচ্ছে। তিনি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভূয়সী প্রশংসা করেন। স্মরণ করেন যে রানি সব সময় তাঁর ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার খোঁজখবর নিতেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, কমনওয়েলথ লিডারস ইভেন্টের সময় শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী রাজাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। রাজা ইতিবাচক সাড়া দেন।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.