ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আবেদনের সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আবেদনপত্র দাখিলের সময়সীমা আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (প্রকাশনা) সাঈদা খানমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আবেদনের লক্ষ্যে সকল আবেদনকারীর পূর্ণাঙ্গ ও মানসম্মত প্রস্তাবনা তৈরি এবং বিভিন্ন দলিলাদি সংগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করে এই সময় বাড়ানো হলো।
আবেদনের ক্ষেত্রে আগের বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত ২০ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ১ আগস্টের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশের মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবেদন নেওয়া হবে অনলাইনে। অনলাইনে আবেদন জমা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আলাদা একটা পাতা খুলেছে। সেখানে গিয়ে আগ্রহীরা আবেদন জমা দিতে পারবেন। আবেদন ফি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংককে অফেরতযোগ্য পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ব্যাংক করতে প্রয়োজন হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা মূলধন জোগান দিতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এই ব্যাংক স্থাপনে উদ্যোক্তাদের অর্ধেককে হতে হবে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, উদীয়মান প্রযুক্তি, সাইবার আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে শিক্ষা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। বাকি অর্ধেককে হতে হবে ব্যাংকিং, ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ডিজিটাল ব্যাংককে কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রচলিত ব্যাংকের মতো সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ন্যূনতম নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) বজায় রাখতে হবে।
বর্তমানে দেশে প্রচলিত ধারার ব্যাংক আছে ৬১টি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে ডিজিটাল ব্যাংক চালুর ঘোষণা দেন।
ডিজিটাল ব্যাংক কী ও কেমন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয় থাকবে। তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনাবিহীন। অর্থাৎ, এই ব্যাংক কোনো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। এর নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএমও থাকবে না। সব সেবাই হবে অ্যাপনির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই সেবা মিলবে।
গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চ্যুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারবে। লেনদেনের জন্য কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। অবশ্য এই ব্যাংকের সেবা নিতে গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। ডিজিটাল ব্যাংক কোনো ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারবে না। বড় ও মাঝারি শিল্পেও কোনো ঋণ দেওয়া যাবে না। শুধু ছোট ঋণ দিতে পারবে।