ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ৫২টি আবেদন পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবেদন করার তালিকায় ব্যাংক, বীমা, এমএফএস, ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিসহ বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব আবেদন প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে পাঠাবে। কারা লাইসেন্স পাবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
প্রচলিত ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ৫০০ কোটি টাকার উদ্যোক্তা মূলধন দরকার হয়। তবে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রথমে গত ২১ জুন থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় দেওয়া হয়। পরে সময় বাড়িয়ে ১৭ আগস্ট করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য ৫২টি আবেদন পাওয়া গেছে। এসব আবেদনের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে পরিচালনা পর্ষদে পাঠানো হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ বা ঋণ দেওয়া সবই হবে ডিজিটাল ব্যবস্থায়। এ ধরনের ব্যাংক প্রযুক্তিনির্ভর সেবা দেবে। ব্যাংকের নিজস্ব শাখা, উপশাখা, এটিএম বুথ বা কোনো ধরনের ব্যবসাকেন্দ্র থাকবে না। কেবল একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে, যা হবে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও সহায়ক কর্মীদের দপ্তর। সশরীরে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির কেন্দ্রীয় দপ্তর হিসেবেও এটি কাজ করবে। আর গ্রাহকদের জন্য ডেলিভারি চ্যানেল হিসেবে প্রচলিত ব্যাংক বা এমএফএস এজেন্ট, এটিএম, সিডিএম, সিআরএম নেটওয়ার্ক এবং এমএফএস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে। ডিজিটাল ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড বা অন্য কোনো অগ্রসর প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য ইস্যু করতে পারবে।
ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় আবেদন করেছে যারা
‘ডিজি টেন পিএলসি’ নামে ১০টি ব্যাংক যৌথভাবে আবেদন করেছে। এ তালিকায় রয়েছে সিটি, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ডাচ্-বাংলা, মার্কেন্টাইল, পূবালী, এনসিসি, প্রাইম, ট্রাস্ট ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে বিকাশ, ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রের মানি ইন মোশন, আইএফসি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যান্ট গ্রুপ ও সফটব্যাংক ভিশন ফান্ড। নগদও ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদন করেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকও আবেদন করেছে। এ জোটে আরও কিছু ব্যাংক যুক্ত হবে। প্রগতি ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ‘আমার ডিজি ব্যাংক’ নামে আবেদন করেছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট। এসিআই লিমিটেড ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে। মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক ও তাদের মূল কোম্পানি ভিওন মিলে ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের আবেদন করেছে। সঞ্চয় ডিজিটাল ব্যাংক নামে ঢাকা ব্যাংকসহ কয়েটি প্রতিষ্ঠান মিলে আবেদন করেছে। এ ছাড়া ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাও ‘পাঠাও ডিজিটাল ব্যাংক’ নামে আবেদন করেছে।
বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি উপায়ের নেতৃত্বে একটি জোট আবেদন করেছে। প্রস্তাবিত নাম ঠিক করা হয়েছে ‘উপায় ডিজিটাল ব্যাংক’। এ জোটে আছে এনআরবিসি ও মেঘনা ব্যাংক, আরামিট, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস ও জেনেক্স ইনফোসিস।