‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় নদীতে নেমে ধাওয়া, পাল্টা গুলি-ককটেল, গণপিটুনিতে নিহত ২

0
9
কীর্তিনাশা নদীর দুই পাড় ও নদীতে নেমে সন্দেহভাজন ডাকাত দলকে ধাওয়া দেন স্থানীয় লোকজন।

‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় শরীয়তপুর সদরের কীর্তিনাশা নদীর দুই পাড় ও নদীতে নেমে সন্দেহভাজন ডাকাত দলকে ধাওয়া দেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় ওই দল স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। পরে স্পিডবোট ফেলে ওই দলের সদস্যরা একটি ইটভাটায় আশ্রয় নিলে স্থানীয় লোকজন তাদের ঘিরে ধরে পিটুনি দেন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়।

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। দিবাগত রাত একটার দিকে পুলিশ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। মরদেহ দুটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এখনো তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে ও পিটুনির শিকার হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে আটজন আহত হন। গণপিটুনিতে ডাকাত দলের আরও পাঁচ সদস্য আহত হয়েছে। ওই পাঁচজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে বালু পরিবহনের নৌযান বাল্কহেডে হানা দেয় ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল। তখন ওই এলাকার নৌযানের শ্রমিকেরা ও স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করেন। ওই দলের সদস্যরা গুলি ও ককটেল ছুড়ে স্পিডবোটে করে কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালাতে থাকেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের দাদপুর এলাকা থেকে ডোমসার তেঁতুলিয়া পর্যন্ত কীর্তিনাশা নদীর দুই তীরে ও নদীতে নেমে স্থানীয় লোকজন তাদের ধাওয়া করতে থাকেন। তখন ওই দলের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেন।

আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে

একপর্যায়ে ডোমসার তেঁতুলিয়া এলাকায় নদীতে স্পিডবোট ফেলে একটি ইটভাটায় আশ্রয় নেয় ১০ থেকে ১২ জনের দলটি। স্থানীয় লোকজন ওই ইটভাটা ঘেরাও করে তাদের সাতজনকে আটকে পিটুনি দেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় মানুষদের সরিয়ে আহত ডাকাতদের উদ্ধার করেন। রাত একটার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি স্পিডবোট ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মুনতাসির খান বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজনকে এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরপর রাত ১২টার পর তিন দফায় আরও সাতজনকে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় ডাকাতির চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজন ডাকাত দলের সদস্যদের ধাওয়া করেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতেরা নিজেদের রক্ষা করতে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গণপিটুনিতে নিহত দুজনের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.