ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করলে আমরাও ব্যবস্থা নেব: ট্রুডো

0
14
কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক একটি উপদেষ্টা পরিষদে কথা বলছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ৩১ জানুয়ারি ২০২৫,ছবি: রয়টার্স

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে জোরালো কিন্তু যুক্তিসংগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

গতকাল শুক্রবার কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠকে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমার বলতে দ্বিধা নেই, আসছে দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমাদের দেশকে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে। আমি জানি, কানাডার নাগরিকেরা হয়তো উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। কিন্তু আমি তাঁদের জানাতে চাই, ফেডারেল সরকার ও সরকারি সব সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে তাঁদের কথা ভেবেই নেওয়া হয়।’

আজ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডার পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।

আজ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডার পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।

স্থানীয় সময় গতকাল রাতে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, এ সপ্তাহান্ত থেকেই কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা পণ্যকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

তবে কানাডার তেলের ওপর ২৫ শতাংশ নয়, বরং ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তেলের ওপর শুল্ক কার্যকরও এখনই হচ্ছে না বলে গতকাল জানিয়েছেন ট্রাম্প। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কার্যকর হবে।

শুল্ক আরোপের এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্য সব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ট্রাম্প তিন কারণে এ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ‘এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্যসব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।’

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর ও বাইরে থেকে ব্যবসায়ী নেতারা ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে, ছবি: এএফপি

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

উল্লেখ্য, কানাডার সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ মিত্রতার সম্পর্কের ইতিহাসও রয়েছে। কানাডার মোট রপ্তানি পণ্যের ৭৫ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রে।

ট্রুডো বলেছেন, ‘বাণিজ্য বিরোধ ও কূটনৈতিক জটিলতা আমরা চাই না। কিন্তু যদি ট্রাম্প তাঁর হুমকি বাস্তবে অনুসরণ করেন, তবে আমরাও ব্যবস্থা নেব।’

কানাডা যদি প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করে, তবে তাতে প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের সামান্য ক্ষতিই হবে। প্রথম দফায় শুল্ক আরোপের প্রভাব কানাডায় যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি করা ৩ হাজার ৭০০ কোটি কানাডীয় ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর পড়বে। তবে কানাডা সরকার ভবিষ্যতে আরও ১১ হাজার কোটি কানাডীয় ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করবে বলে জানিয়েছে।

এদিকে এ বাণিজ্য বিরোধের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে কানাডীয় ডলারের দাম পড়ে গেছে। এতে কানাডার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসির খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদারদের অন্যতম চীন, কানাডা ও মেক্সিকো। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ৪০ শতাংশ গেছে এ তিন দেশে থেকে। আর তিনটি দেশ থেকেই পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.