ক্রাইস্টচার্চের ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক স্টেডিয়ামটি আর নেই। ২০১১ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর স্টেডিয়ামটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে তা ভেঙে বিনোদন পার্কে রূপান্তরিত করা হয়।
‘অস্তিত্বহীন’ সেই মাঠেই ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ২৩৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রাহাম ডাউলিং, যা টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে কারও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল। ৫৭ বছর আগে গড়া ডাউলিংয়ের রেকর্ডটিও আজ ল্যাঙ্কাস্টার পার্কের মতোই বিলীন হয়ে গেল।
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই ডাউলিংয়ের কীর্তি ভেঙে দিয়েছেন উইয়ান মুল্ডার। বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনে নামা মুল্ডার অপরাজিত ২৬৪ রানে! প্রোটিয়ারা প্রথম দিন শেষ করেছে ৯০ ওভার ৪ উইকেটে ৪৬৫ রান তুলে। ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এখন পর্যন্ত মেরেছেন ৩৪ চার ও ৩ ছক্কা।
অথচ মুল্ডারের এত তাড়াতাড়ি দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক হওয়ারই কথা নয়। টেস্টের বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটির অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে জিম্বাবুয়ে সফরে যাননি। বিশ্রামে রাখা হয়েছে সহ–অধিনায়ক এইডেন মার্করাম এবং অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদাকেও। তাঁদের অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হয়েছিল বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজের কাঁধে।
কিন্তু বুলাওয়াতেই প্রথম টেস্টে ব্যাটিংয়ের সময় মহারাজ কুঁচকিকে চোট পাওয়ায় দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েন। তাঁর জায়গায় প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিতে নেমেই ইতিহাস গড়লেন মুল্ডার।
টেস্টের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে এ নিয়ে ৩৪ জন ক্রিকেটার অধিনায়কত্বের অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেলেন। তালিকায় আছেন বাংলাদেশের সদ্য সাবেক টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও। ২০২৩ সালে সিলেট টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব–অভিষেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করেছিলেন নাজমুল।
মুল্ডার ও ডাউলিং ছাড়া আর একজনেরই টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি আছে—ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল (২০৩*, জর্জটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০৫ সালে)।
৭০ বছরের মধ্যে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো অধিনায়কের টেস্ট অভিষেকে প্রথম সেঞ্চুরি। মুল্ডারের আগে প্রোটিয়াদের প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিতে নেমে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন জ্যাকি ম্যাকগ্লু, ১৯৫৫ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।