ঈদের আগে ঘরে ফেরা মানুষের খবর সংগ্রহের জন্য আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার সায়েদাবাদের সাকুরা পরিবহনের বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই প্রতিবেদক। হুমায়ুন কবির নামের একজন যাত্রী ওই বাস কাউন্টারে আসেন। তিনি টিকিট বিক্রেতা জাহিদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভাই, বরিশালের টিকিট আছে?’
জবাবে জাহিদ বলেন, ‘ভাই, একটা টিকিট আছে। দাম এক হাজার টাকা। গাড়ি ছেড়ে যাবে বেলা সাড়ে ১১টায়।’
হুমায়ুন কবির মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার নোট জাহিদের হাতে তুলে দেন। জাহিদ তখন কম্পিউটারের সামনে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর জাহিদ হুমায়ূনের হাতে একটা টিকিট ধরিয়ে দেন। টিকিটে সব কম্পিউটারে লেখা। টিকিটে লেখা খুঁটিনাটি সব পড়ে ফেলেন বেসরকারি চাকরিজীবী হুমায়ুন।
টিকিটের গায়ে কম্পিউটারে দাম লেখা ৬১৮ টাকা। হুমায়ুন বিক্রেতা জাহিদকে বলেন, ‘ভাই, আপনি যে আমার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিলেন। কিন্তু টিকিটের গায়ে লেখা ৬১৮ টাকা। আপনি এই টিকিট পরিবর্তন করে দেন।’ জাহিদ ক্রেতা হুমায়ূনকে বলেন, ‘ভাই, আমি টিকিটের গায়ে লেখা ৬১৮ কেটে দিয়ে হাতে এক হাজার টাকা লিখে দিচ্ছি।’
এতে রাজি না হয়ে হুমায়ূন কম্পিউটারে প্রিন্ট করা এক হাজার টাকার টিকিট চান। ক্ষুব্ধ বিক্রেতা জাহিদ তখন বরিশালের কোনো টিকিট খালি নেই হুমায়ূনকে জানান। তিনি বলেন, ‘সব বুকিং দেওয়া হয়েছে। আপনি এখন আসতে পারেন।’
জাহিদের এ কথা শুনে হুমায়ূন তখন বলতে থাকেন, ‘আপনি এই অপকর্ম কেন করলেন? আমাকে শুরুতে বলতে পারতেন, ভাই বরিশালে নরমাল টিকিটের দাম ৬১৮ টাকা। কিন্ত ঈদের সময় কিছু টাকা বকশিশ দিয়েন। কিন্তু আপনি সেটি না করে টিকিটের দাম হাঁকালেন এক হাজার টাকা। আপনি কেন এই অপকর্ম করলেন?’
পরে জাহিদের কাছে অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, হুমায়ুন কবিরের কাছে এক হাজার টাকা চাওয়া ঠিক হয়নি।
সায়েদাবাদের আরও অন্তত পনেরটি বাস কাউন্টারে সরেজমিনে দেখা গেছে, টিকিটের জন্য যাত্রীরা কাউন্টারে আসার পর বলা হচ্ছে, টিকিট সব শেষ। এই কথা শোনার পর হতাশ হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। কিছুক্ষণ পর ওই কাউন্টারের লোকজন বলছেন, দাম বেশি দিলে টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারবেন। যাত্রীদের অভিযোগ, সায়েদাবাদে যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করছে কোনো কোনো বাস কাউন্টার।