টানা এক সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, ঝলমলে রোদে স্বস্তি

0
142
শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই প্রতিদিনই সকাল সকাল দেখা মেলে ঝলমলে রোদের। সকালের মিষ্টি রোদে এক শিশুকে বাইসাইকেলে নিয়ে বের হয়েছেন এক ব্যক্তি। আজ শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার শুরিভিটা এলাকায়

সর্ব–উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা সাত দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। ‘হিমালয়কন্যা’খ্যাত এ জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার দাপট কাটলেও উত্তরের হিমেল বাতাসে অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। এমন আবহাওয়ার মধ্যে স্বস্তি হয়ে আসছে রোজ সকালে ওঠা ঝলমলে রোদ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত শনিবার (পৌষের প্রথম দিন) থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ছয় দিনও এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সপ্তাহজুড়ে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ থেকে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আরও জানিয়েছে, দিনের বেলা ঝলমলে রোদ থাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে। গতকাল বিকেলে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাত দিন ধরে এখানে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৬ থেকে ২৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ আজ সকালে মুঠোফোনে বলেন, বর্তমানে এ এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আকাশে কুয়াশা ও মেঘের পরিমাণ কম থাকায় দিনের বেলা ঝলমলে রোদ উঠছে। তবে উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এখন থেকে ধীরে ধীরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিষয়ক কর্মকর্তা।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, কোনো এলাকার তাপমাত্রা যদি ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে টানা তিন দিন অবস্থান করে, তাহলে ওই এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় বলে বিবেচনা করা হয়।

এবার পৌষের শুরু থেকেই পঞ্চগড়ে হিমেল হাওয়া বইলেও সকালে কুয়াশা কমে ঝলমলে রোদ উঠছে। রোদের মধ্যেও বেশ অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে ও সকালের কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আজ সকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে ঝলমলে রোদ। এর মধ্যেই বইছে হিমেল বাতাস। শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষেরা গন্তব্যে ছুটছিলেন। মিষ্টি রোদের মধ্যে কৃষকেরা কাজ করছিলেন ফসলের মাঠে।

সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে বের হন কাঠমিস্ত্রি রুবেল ইসলাম। সদর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সারা রাইত খুব ঠান্ডা। এইবার ঠান্ডা বাতাস বেশি, কুয়াশা কম। সকালে বেশি কুয়াশা হইলে কাজোত যাইতে মন চাহে না। সকালে রোদখান দেখে ভালোয় নাগেছে।’

জহির উদ্দিন নামের এক কৃষক বলেন, ‘সকালে ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা পটপট করছে। এলা রোদ উঠিবা দেখে মনডা কহচে দিনডা ভাল যাবে। এ রকম রোদ থাকিলে কাজ-কাম করে আরাম পামো।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.