জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘আমি বিক্রি হওয়ার মতো মানুষ নই। ইউটিউবে কেউ একজন প্রচার করেছে আমি নাকি বিক্রি হয়ে গেছি। এই কথাটা আমাকে আহত করেছে। চাকরি জীবনে অনেক পাওনাও গ্রহণ করিনি নীতির প্রশ্নে। একবার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছি, আরেকবার মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি। টাকা বা ক্ষমতার জন্য বিক্রি হতে পারি না।’
ভারত থেকে ফিরে সপ্তাহখানেক নীরব থাকার পর বুধবার জাপার বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তিন দিনের ভারত সফর শেষে গত ২৩ আগস্টের পর রাজনীতি নিয়ে কথা বলেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়ায়, বর্তমান ব্যবস্থায় দলীয় সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নিতে জাপার উপর ভারতের চাপ রয়েছে। দলটি ভারতের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হয়।
জি এম কাদের এসব গুজব নাকচ করেছেন। তিনি বলেন, ‘২৫ বছর চাকরির শেষে ১০ বছর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। শেষের ২ বছর আমার মাধ্যমে দেশের সব পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয় করা হতো। অবৈধভাবে টাকা-পয়সার অর্জনের সুযোগ ছিল। ২৮ বছরের রাজনীতিতে ২০ বছর ধরে এমপি এবং পাঁচ বছরে দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছি। আমি বিক্রি হওয়ার মানুষ নই, আমি দল, দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করি।’
জি এম কাদের আগের মতোই ভারত সফরের বিস্তারিত প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, ‘আগেও বলেছি ভারত শান্তিপূর্ণ এবং সুন্দর নির্বাচন চায়। তারা চায় নির্বাচনের আগে ও পরে যেনো কোনো সহিংসতা না হয়। কে ক্ষমতায় আসবে বা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে ভারতের বক্তব্য নেই। তারা মনে করে এসব বিষয় ঠিক করবে দেশের জনগণ, এগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। ভারত চায়, বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোতে যেনো কোনো ঝামেলা না হয়। বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো বিষয় আছে, তাই তারা চায় না এ দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হোক।’
ভারত সফরের বিষয়ে নীরব থাকার কারণ তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, ‘যে কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। দুটি পক্ষ যেটুকু প্রকাশে সম্মত হবে, ততটুকুই প্রকাশ করা হয়। যেকোন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তাদের সম্মতি ছাড়া প্রকাশ করাটা ভদ্রতা মনে করি না।’
নিজ খরচে ভারতে গিয়েছিলেন বলে জানান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গিয়েছিল বিজেপির আমন্ত্রণে। জাতীয় পার্টির প্রতি ভারত সরকারের আগ্রহ আছে। তারা সেই সম্পর্ক সৌহার্দপূর্ণ বজায় রাখতে চাইছে।’