টাকা উপার্জনের জন্য দেশ ছেড়েছিলেন পিয়া বিপাশা, এখন কেমন আছেন

0
14
পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

পাঁচ বছর আগে হুট করে দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান মডেল ওঅভিনয়শিল্পী পিয়া বিপাশা। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা। গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে এমনটাই জানালেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী পিয়া বিপাশা।

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

বিনোদন অঙ্গনে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় নাম লেখান পিয়া বিপাশা। প্রতিযোগিতার সেরা দশে পৌঁছানোর পর হঠাৎ ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ শুরু করেন। পরের বছর ২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

এখন আর অভিনয় টানে না পিয়া বিপাশাকে। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্য প্রতিষ্ঠানের প্রচারণায় নিজেকে যুক্ত করেছেন। এসব থেকে ভালো আয় হয় তাঁর, এমনটাই জানালেন তিনি। পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। আশপাশের মানুষও কেমন জানি ছিল। এ–ও দেখতাম, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বাংলাদেশ ছাড়ার আগে পিয়া বিপাশার সংসারে বিচ্ছেদ ঘটে। সেই সংসারে একটি কন্যাসন্তানও আছে। সেসব মনে করে নিউইয়র্ক থেকে এই মডেল ও অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম, টাকা রোজগার করতে। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। সেই মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। পাঁচ বছর আগে চলে আসি। আমেরিকায় এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। ইনস্টাগ্রাম তিন বছর ধরে বন্ধ ছিল। বছরখানেক ধরে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছি। তাই ইনস্টাগ্রাম চালু করেছি। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

টাকা আয় করতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন, সে ক্ষেত্রে কতটা সফল, এমন প্রসঙ্গ উঠতেই পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। ওরা দুজনে চায় যে আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বাসায় আমার একটা কুকুর আছে, বিড়াল আছে। আমি ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠি, এরপর জিমে যাই, নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করি। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি।

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না। অন্যদিকে আমার জামাই বেশ হিসেবি। সে শুধু নতুন নতুন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চায়।’

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

পিয়া বিপাশা নিয়মিত তাঁর ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক পেজে স্থিরচিত্র ও ভিডিও পোস্ট করেন। এসব নিয়ে সমালোচনায়ও পড়েন। তবে তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেন না। পিয়া বিপাশা বলেন, ‘আমি এখানে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ করছি। মডেলিং করছি। বিভিন্ন ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছি। ব্যান্ডের ওরা যোগাযোগ করে। আমি ছবি তুলে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করি। সেখান থেকে আমি নিয়মিত টাকা পাই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ছবিগুলো কখনো আমার স্বামী তুলে দেয়, কখনো মেয়েও তুলে দেয়। সম্প্রতি আমি ক্যামেরা কিনেছি। লাইটিং ও এডিটিংয়ের কৌশল শিখেছি। আমার বাসায় স্টুডিও আছে। বেশির ভাগ ছবি স্টুডিওতে ওরাই তুলে দেয়। আবার কখনো ফটোগ্রাফার তুলে দেয়। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার পর উল্টাপাল্টা মন্তব্য করার কারণে মন্তব্যের ঘর বন্ধ করে রেখেছি চার থেকে পাঁচ বছর। ফেসবুক পেজের মন্তব্যের ঘরও বন্ধ করে রেখেছি। কারণ, মানুষ আজেবাজে মন্তব্য করে। তারা বলে, কী কাপড় পরি, এসব কেমন পোজ, এসব…। তবে আমার হাজব্যান্ড অনেক খুশি। সে চায়, আমি খোলামেলা জামা পরি, এটা তার ভালো লাগে।’

পিয়া বিপাশা, ছবি : পিয়ার ফেসবুক পেজ থেকে

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.