আম পাকতে আর কয়েকটা দিন বাকি। এরই মধ্যে বুধবার দিবাগত রাতের ঝড়ে রাজশাহীর আমের ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও গাছের এক–চতুর্থাংশ আম ঝড়ে ঝরে গেছে। গ্রামের লোকজন সেই আম কুড়িয়ে কম দামে বিক্রি করছেন। এই আম ব্যবসায়ীরা আচার তৈরির জন্য কিনছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। গত বছর ১৮ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে।
ঝড়ে কী পরিমাণ আমের ক্ষতি হতে পারে, জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, এটা তাঁরা এখনো নির্ণয় করতে পারেননি। সব জায়গা থেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা এলে পরে বলতে পারবেন। একটু সময় লাগবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর মধ্যে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে। এই বাজারের বড় আড়ত মেসার্স হালিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী খাইরুল ইসলাম জানান, সকালে ঝড়ে পড়া আম দুই টাকা থেকে পাঁচ টাকা কেজি দরে ব্যবসায়ীরা কিনেছেন। বানেশ্বর থেকে অন্তত ১০ ট্রাক ঝড়ে পড়া আম ব্যবসায়ীরা নিয়ে গেছেন। রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘায় জেলার সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদিত হয়।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের বড় আমচাষি ও ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তাঁর বাগানে ছোট–বড় মিলে প্রায় ৭০০ আমগাছ রয়েছে। তাঁর বাগানে সব জাতের আম রয়েছে। মৌসুমের আমের পরিচর্যা প্রায় শেষের দিকে। এখন শুধু আম পাকার জন্য অপেক্ষা। এই অবস্থায় রাত তিনটার দিকে প্রবল ঝড়ে তাঁর বাগানের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ আম ঝরে পড়েছে। এই আম গ্রামের গরিব মানুষ কুড়িয়ে ১০০ টাকা বস্তা (৯০ কেজি) বিক্রি করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আড়পাড়া বাজারে ঝড়ে পড়া আমের চারটি ট্রাক বোঝাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঝড় তাঁর সর্বনাশ করে গেছে।
চারঘাট উপজেলার ডাকরা পাগলপাড়ার মোড়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝড়ে পড়া আম কিনছিলেন ব্যবসায়ী আকবর আলী। এই মোড়ে তিনি মিনিট্রাকের ঝড়ে পড়া কাঁচা আম বোঝাই করছিলেন। তিনি বললেন, এই আম ১২০ টাকা মণ হিসেবে কিনেছেন। চারঘাটের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ঝড়ে পড়া আমের স্তূপ দেখা গেছে।