রেবা বলেন, তাঁর স্বপ্ন ছিল মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু অর্থাভাবে শেষ পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে পড়তে না পারলেও চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিপ্লোমা পাস করেন। ১৯৮৮ সালে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি নেন। এরপর ১৯৯৫ সালে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা পদে চাকরি হলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
একজন সফল মা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন রেবা। একমাত্র ছেলে হেমন্ত রায় চৌধুরী বর্তমানে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে কর্মরত। যমজ মেয়ে তনয়া রায় চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং তন্ময়া রায় ঢাকা বারডেম জেনারেল হাসপাতালের অধীনে বারডেম একাডেমিতে পড়াশোনা করছেন।
সাবিনার ওপর আস্থা রাখছেন রোগীরা
রেবা রায় বলেন, চাকরিজীবনে তিনি সফলতা পেয়েছেন। জেলা ও উপজেলা কার্যালয় থেকে পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ কর্মীর পুরস্কার। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি এবং পরিবার পরিকল্পনা কার্যনির্বাহী কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রেবা রায় বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু আর্থিক সংকটে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিপ্লোমা করে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে পারছি। ছেলেমেয়েদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। এখন আমার পরিবারের সবাই চিকিৎসক। বাকি জীবনে অবহেলিত ও নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে চাই। চাই সমাজের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে।’ কঠিন সময়ে ভেঙে না পড়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো কাজে সদিচ্ছা, সততা, স্বচ্ছতা ও চেষ্টা থাকলে মানুষ সফল হবেই। কারও ওপর নির্ভর না করে নিজের জীবন নিজেকেই গোছাতে হবে। সফল হওয়ার পেছনে এটাই হচ্ছে মূলমন্ত্র।
বদরগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের চিকিৎসক শামীমা ইয়াসমিন বলেন, রেবা রায় একজন ভালো কর্মী, একজন ভালো মানুষ। তিনি সব বাধা পেরিয়ে একজন সফল নারী।