ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর রাস্তায় হাঁটুপানি, ভোগান্তি

0
89
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের পাশের কর্দমাক্ত রাস্তা

প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত ইট বিছানো রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি খারাপ থাকায় লোকজন অপর পাশে মাঠের মধ্যে থাকায় রাস্তা দিয়ে চলাচল করছিলেন। বৃষ্টির কারণে সেই রাস্তায়ও এখন হাঁটুসমান কাদা জমে আছে। এতে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের পূর্ব পাড়ার তিন হাজার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

গ্রামবাসী বলছেন, মাত্র দেড় কিলোমিটার ভাঙাচোরা ও কর্দমাক্ত রাস্তার কারণে তাঁদের ভোগান্তির শেষ নেই। কাদা মাড়িয়ে আর ভাঙাচোরা রাস্তায় কষ্ট করে চলাচল করতে হয়। ইচ্ছা করলেই যখন-তখন বাড়ি থেকে বের হওয়া কষ্টকর।

তাঁরা এই দেড় কিলোমিটার পাকা করার জন্য একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আবারও তাঁরা এই দেড় কিলোমিটার রাস্তা দ্রুত পাকা করার দাবি জানিয়েছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার একটি বড় বাজার তালসার। এই বাজারে একটি কলেজ, একটি উচ্চবিদ্যালয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি পুলিশ ফাঁড়িসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

বাজারের কয়েক শ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। বাজারের মাঝ দিয়ে চলে গেছে কোটচাঁদপুর-ঝিনাইদহ ভায়া তালসার সড়ক। বাজারটি তালসার গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় নামকরণ হয়েছে তালসার বাজার। বাজারের পূর্ব পাশে রয়েছে তালসার পূর্ব পাড়া। এই পাড়ার মানুষের চলাচলের একটি রাস্তা আছে। এর নাম তালসার-ঘাঘা রাস্তা। এলজিইডির দেড় কিলোমিটারের এই রাস্তাটির আধা কিলোমিটারে ইতিপূর্বে ইট বিছানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, তালসার পূর্ব পাড়ার তিন হাজারের বেশি মানুষ বাস করেন। তাঁদের নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বের হতে হয়। আর বাড়ি থেকে বের হওয়ার একটি মাত্র রাস্তা তালসার-ঘাঘা রাস্তা। তালসার থেকে যে সড়কটি ঝিনাইদহে চলে গেছে, তার থেকে কিছু দূর গিয়ে জালালপুর বাজারের দিকে আরেকটি শাখা রাস্তা বেরিয়ে গেছে।

ওই রাস্তা তাঁদের গ্রামের পূর্ব পাশে। এই তালসার বাজার থেকে তাঁদের পাড়ার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া রাস্তাটি পাড়ার পূর্ব পাশ হয়ে মাঠ পেরিয়ে জালালপুর পিচঢালাইয়ের রাস্তায় মিশেছে। মধ্যে তাঁদের পাড়ার এই দেড় কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার জানান, রাস্তাটির কথা মনে হলে বাড়ি থেকে বের হতে ইচ্ছা করে না। বাজারে যেতে হলে ভাঙাচোরা রাস্তা পার হতে হয়, আর মাঠে যেতে হলে কাদা পেরোতে হয়, যা খুবই কষ্টকর। রাস্তাটি পাকা করার জন্য তাঁরা একাধিকবার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু রাস্তা পাকা হয়নি।

আবদুস সাত্তার আরও বলেন, আনুমানিক ২০ বছর আগে এই দেড় কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে আধা কিলোমিটার ইট বিছিয়ে পাকা করেছিলেন। সেটাও অল্প দিনে নষ্ট হয়ে গেছে। ইট উঠে, ভেঙেচুরে জায়গায় জায়গায় এমন গর্ত হয়েছে যে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না।

পাড়ার কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। কাঁধে করে অথবা ভ্যান ঠেলে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয়। পাড়ার কৃষকদের তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য মাঠ থেকে ঘরে তুলতে কষ্ট করতে হয়। বেশির ভাগ কৃষক মাথায় করে তাঁদের ফসল ঘরে তোলেন। বাজারে বিক্রির জন্য নেওয়ার সময়ও তাঁদের কষ্ট হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.