জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে মেয়েদের সরব অংশগ্রহণ ছিল। সেই উত্তাল সময়ে সাহস করে আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শিক্ষার্থীরা উৎসাহ ও উদ্দীপনায় তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দাবির কথা তুলে ধরলে তা মনোযোগ দিয়ে শোনেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সময়ের সাহসী নারীদের সাক্ষাতের এ আয়োজন করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘জুলাইয়ের কন্যারা… আমরা তোমাদের হারিয়ে যেতে দেব না’।
এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা। এ ছাড়া কর্মজীবী নারীরাও তাদের অবদান জানাতে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ অনেক উচ্ছ্বাসের দিন, ক্ষোভের দিন, ইমোশনের দিন। আজ সব একসঙ্গে প্রকাশ করার দিন। উচ্ছ্বাস আছে বলেই তো আমরা এখানে আছি। উচ্ছ্বাস-ক্ষোভ না থাকলে আমরা তো মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারতাম না। এগুলো আছে থাকবে। যখনই দরকার তখন প্রকাশ করব। যখন যেখানে যতটুকু দরকার ততটুকু প্রকাশ করব। সেই শক্তি যেন আমাদের থাকে।
জুলাইয়ের বিপ্লবী নারীদের উদ্দেশে ইউনূস বলেন, আজ আমার জন্য ঐতিহাসিক দিন, তোমাদের সাক্ষাৎ পেয়ে আমি আনন্দিত। তোমরা বাংলাদেশকে আজ যে পর্যায়ে নিয়ে গেছ সেটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ঐতিহাসিক ঘটনার যারা নায়িকা তাদেরকে আমি মনেপ্রাণে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, জুলাই মাসে বাংলাদেশে যেটা হয়ে গেল এটার নজির পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। পৃথিবীতে বহু অভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু এটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। এটা ছিল তোমাদের নিজের হাতে গড়া একটা জিনিস। এখানে কোনো বড় নেতা এসে হুকুম দেয়নি। তোমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছ।
ড. ইউনূস বলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-কর্মজীবী মেয়ে এমনকি বাসায় থাকে… যে যেখানে থাকে সেখান থেকে এসে এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে এবং সমানভাবে এগিয়ে এসেছে। এটা বাংলাদেশকে একেবারে পরিবর্তন করে দিয়েছে। ফলে ৫ আগস্টের আগের বাংলাদেশ আর নেই। এটা নতুন বাংলাদেশ। নতুন এই বাংলাদেশ আমরা গড়ব। দেশ বদলানোর যে প্রতিজ্ঞা তোমরা নিয়েছ সেটা ধরে রাখবা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, ‘জুলাইয়ের কন্যারা… আমরা তোমাদের হারিয়ে যেতে দেব না’ শীর্ষক নারী সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন, যেখানে জুলাই বিপ্লবের কন্যাদের কীর্তিগাঁথা ও অবদান তুলে ধরা হয়।