জাপানে ন্যাটোর অফিস খোলাকে ‘বড় ভুল’ বলছে ফ্রান্স

0
101
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ

জাপানে ন্যাটোর লিয়াজোঁ অফিস খোলার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে ফ্রান্স। দেশটি জাপানে ন্যাটোর অফিস খোলার প্রস্তাবের বিষয়ে অসন্তুষ্ট। এটিকে একটি ‘বড় ভুল’ হিসেবে দেখছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

ন্যাটোকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় মিত্রদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান সত্ত্বেও ফ্রান্স ন্যাটো জোট ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় এমন কিছুকে সমর্থন করতে নারাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফরাসি কর্মকর্তা বলেন, অনুচ্ছেদ ৫ ও নিবন্ধ ৬ স্পষ্টভাবে ন্যাটোকে উত্তর আটলান্টিকে সীমিত করে।

তিনি বলেন, এ অঞ্চলের কোনো দেশে ন্যাটোর কোনো যোগাযোগ কার্যালয় নেই। যদি এই অঞ্চলে ন্যাটোর পরিস্থিতিগত সচেতনতার দরকার হয় তবে যোগাযোগের পয়েন্ট হিসেবে মনোনীত দূতাবাসগুলো ব্যবহার হতে পারে।

তবে এ নিয়ে জাপান সরকারের মুখপাত্র হিরোকাজু মাতসুনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেছেন, এ নিয়ে ন্যাটোর মধ্যে ‘বিভিন্ন বিবেচনা’ চলছে।

সম্প্রতি ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, সংস্থাটি টোকিওতে একটি অফিস খুলবে। চীন ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়া হিসেবে টোকিওতে এ অফিস খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এশিয়ায় এ ধরনের প্রথম দপ্তর স্থাপন করতে যাচ্ছে প্রতিরক্ষা সংস্থাটি।

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার জাপান সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে রাশিয়া এবং চীনা সামরিক বাহিনী যৌথ টহল পরিচালনা করে। এর জবাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের ফাইটার জেটগুলো প্ররোচিত হয়। এ ঘটনার পর ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য এলো।

জাপানে ন্যাটোর অফিস খোলার জন্য উত্তর আটলান্টিক কাউন্সিলের সর্বসম্মত অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। যেখানে ফ্রান্স তার ভেটো ব্যবহার করে পরিকল্পনাটি বাতিল করে দিতে পারে।

এই দুই দেশের মধ্যে যৌথ টহল শুরু হয় ২০১৯ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্য পাঠানোর আগে। বেইজিং ও মস্কো তখন ‘নো-সীমানা’ অংশীদারিত্ব ঘোষণা করে এবং তাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠে যা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র অন্যান্য সামরিক জোটদের জন্য হুমকিস্বরুপ।

এদিকে বেইজিং জাপানে ন্যাটোর লিয়াজোঁ অফিস খোলার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আগেই। আগামী বছর জাপানে একটি লিয়াজোঁ অফিস খোলার পরিকল্পনা করছে ন্যাটো- গত মে মাসে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। টোকিওতে এ অফিস খোলার মধ্য দিয়ে এশিয়ায় এ ধরনের প্রথম দপ্তর স্থাপন করতে যাচ্ছে প্রতিরক্ষা সংস্থাটি।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে- ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ন্যাটোর নিরাপত্তা অংশীদার অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে এ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চীন, রাশিয়া ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়টিও রয়েছে পরিকল্পনায়।

এ পরিকল্পনার আওতায় সাইবার নিরাপত্তা, নেতিবাচক প্রচারণাসহ নানা হুমকি সৃষ্টিকারী প্রযুক্তি মোকাবিলা করা হবে। জাপান ও ন্যাটোর কর্মকর্তারা এ পরিকল্পনার কথা নিশ্চিত করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.