জায়গা দিলে সিটি করপোরেশন সড়ক করে দেবে: উত্তরের মেয়র

0
182
সড়কটি উদ্বোধন করে বক্তব্য দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম

ঝকঝকে ৩২২ মিটার রাস্তা। আধা কিলোমিটারের কম, এতটুকু রাস্তাটি আগে ছিল ১৮ ফুট প্রশস্ত। এখন তা ৩০ ফুট করা হয়েছে। বুধবার রাস্তাটির উদ্বোধন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের পাশে যাঁদের বাড়ি, তাঁরা জায়গা ছেড়ে দিলে সড়কটি প্রশস্ত করে দেওয়া হবে।

সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রাজধানীর দক্ষিণখানের কাওলা মধ্যপাড়া এলাকার প্রধান সড়কটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৭৮২ মিটার। পুরো সড়ক ভাঙাচোরা, খানাখন্দে ভরা। কিন্তু সেখানে মাত্র ৩২২ মিটার অংশ পিচঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার এতটুকু অংশের উন্নয়নে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রতি এক মিটার রাস্তা উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে ৪০ হাজার টাকার বেশি।

অবশ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তাদের ভাষ্য, স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বুদ্ধ করতেই রাস্তাটি উদ্বোধন করা হয়েছে। যে রাস্তাটি উন্নয়ন করা হয়েছে, সেটি মূলত ১৮ ফুট প্রশস্ত ছিল। বাসিন্দাদের সহযোগিতায় রাস্তাটি ৩০ ফুট প্রশস্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে মেয়র বাসিন্দাদের এই বার্তা দিতে চান যে রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য জায়গা দিলে মেয়র ওই রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য টাকা বরাদ্দ করবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিক ইসলাম বলেন, নতুন যুক্ত ৪৪ থেকে ৫৪ এই ১১টি ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোর উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের কাজ শেষ হবে। তখন জনগণ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে, জলাবদ্ধতাও থাকবে না। তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় রাস্তার জন্য ৩০ ফুট জায়গা দেওয়ার পর আমরা কাজ করে দিয়েছি। এভাবে রাস্তার জন্য ২০ থেকে ৩০ ফুট জায়গা দিলে সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তা করে দেওয়া হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটির আওতাভুক্ত হওয়ার দীর্ঘদিন পরও নতুন ওয়ার্ডগুলোতে দৃশ্যমান উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না। ফলে বছরের পর বছর স্থানীয় বাসিন্দারা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিশেষ করে ভাঙাচোরা আর খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, জলাবদ্ধতা, পানি ও পয়োনিষ্কাশনের নালার সমস্যা প্রকট। তাই শুধু এইটুকু রাস্তার কাজে বাসিন্দাদের স্বস্তি মিলবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

উন্নয়নকাজে বিলম্ব হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, করোনা ও বৈশ্বিক যুদ্ধের কারণে উন্নয়নকাজ শুরু হতে সময় লাগছে। কিছু কাজ শুরু হয়েছে। টেকসই উন্নয়নে ৬ ফুটের পাইপ দিয়ে নালা করা হচ্ছে। এরপরও রাস্তা করা হবে। না হলে জলাবদ্ধতা হবে।

মশার উপদ্রব কমাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচিও হয়। এ বিষয়ে নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মশার উপদ্রব কমাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, কোনো পাত্রে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। ঘরের আশপাশে ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে, ছাদ পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমা করে রাখা যাবে না। এগুলোর জন্য নগরবাসীকে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, অঞ্চল-৭-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীনসহ একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.