গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৩৫১ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ: ইসি আলমগীর

0
104
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪৮০টি। সবগুলো কেন্দ্রই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প এলাকায় কোথাও কোথাও অপরাধ প্রবণতা বেশি থাকে। ৩৫১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ও ১২৯ টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে গাজীপুর সিটির ভোটের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

ইসি আলমগীর বলেন, প্রার্থীদের নানা অভিযোগ থাকলেও কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা করা হলেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে শিল্প এলাকায় নানা ধরনের মানুষের বসবাস, অপরাধ প্রবণতার কথা মাথায় রেখে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটকেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে সবাই জিততে চায়, সেভাবে তারা প্রচারণা চালায় ও বক্তব্য দেন। কিন্তু ইসির কাজ হচ্ছে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা করা। আমাদের যত রকম ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেগুলো আমরা কমপ্লিট করেছি। ইভিএম প্রস্তুত, বুধবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে ভোট শুরু হবে।

ইসি বলেন, ১১ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি ভোটারের এ সিটি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪৮০টি। এবার তিন-চতুর্থাংশ ভোটকেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকছে।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৮ সালে ৪২৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছিল ইসি।

আলমগীর বলেন, নির্বাচনী পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, কোনো থ্রেট নেই। থ্রেট না থাকলেও প্রিভেন্টিভ মেজার হিসেবে যেহেতু শিল্প এলাকা তাই দুষ্কৃতিকারীরা বা অসৎ উদ্দেশ্য যাদের থাকে তারা যেন অন্যায় পরিস্থিতি করতে না পারে তাই অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৭৬ জন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে। বিজিবি থাকবে প্রায় ১৩ প্লাটুন, আর ২০ জন বেশি। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ প্রচুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। যেন কোনো রকম বিশৃঙ্খলা না হয়।

তিনি আরও বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারী যে দলের বা যেই হোক না কেন তাকে সঙ্গে সঙ্গেই আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী নেওয়া হবে, তা নির্ভর করবে।

ইসি জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে ও ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা।

গাজিপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে লড়ছেন মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।

এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন, ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম লড়ছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.