জর্জিয়া মেলোনি ঢাকায় আসছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ৩১ আগস্ট

0
18
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি

ইতালিতে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের পাশাপাশি বৈধ অভিবাসন বাড়াতে এরই মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। অভিবাসনের পাশাপাশি ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। আগামী ৩১ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির আগামী ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। ৩১ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক, একান্ত আলোচনা আর মধ্যাহ্নভোজ সেরে ওই দিনই তিনি ঢাকা ছেড়ে যেতে পারেন।

আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় ইতালির প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফর নিয়ে রোববার সকালে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।

# অভিবাসন, বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গুরুত্ব পাবে
# এই সরকারের আমলে ইউরোপের কোন শীর্ষ নেতার প্রথম ঢাকা সফর
# ১৯৯৮ সালে ঢাকায় এসেছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী

বিকেলে মন্ত্রণালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, মূলত ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে সহযোগিতার কোন কোন খাত আসতে পারে, সে বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

সহযোগিতার কোন কোন খাত আগস্টের শীর্ষ বৈঠকে গুরুত্ব পেতে পারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, অভিবাসনের ক্ষেত্রে গত মে মাসে সই হওয়া ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আলোচনায় আসবে। এ বিষয়টি যে বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে, এটা বলাই বাহুল্য। এর পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতের বিষয়গুলোও গুরুত্ব পেতে পারে।

একজন কর্মকর্তা জানান, এই মুহূর্তে ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্যও দেশটিতে পাঠানো হয়। এখন তাদের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে। এই বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে।

এটাই হবে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পশ্চিমা কোনো দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রথম ঢাকা সফর। এর আগে ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় এসেছিলেন ইতালির তখনকার প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি। সেটা ছিল বাংলাদেশে দেশটির কোনো প্রধামন্ত্রীর প্রথম সফর।

অবৈধ অভিবাসন বন্ধ এবং বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতালির সঙ্গে গত মে মাসে ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি সই করেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, বৈধ পথে অভিবাসন বাড়াতেই এ উদ্যোগ। যাঁরা ইতালি গমনেচ্ছু তাঁরা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান, সেটাই লক্ষ্য। ইতালি ‘সিজনাল’ ও ‘নন–সিজনাল’ দুইভাবে কর্মী নেবে।

এ সময় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তাঁরা সব সময় শ্রমিকদের বৈধ পথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন ধরে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.