শিল্প-কারখানা ও ভবনের ছাদে দুই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন করা হলে বছরে সাশ্রয় হবে ১১ হাজার কোটি টাকা। ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদন কমবে। এতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসান কমবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানাইসিসের (আইইইএফএ) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা দেশের শিল্প-কারখানার ছাদ থেকে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে নেট-মিটারিংয়ের আওতায় ও এর বাইরে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের সক্ষমতা আছে ১৬০ দশমিক ৬৩ মেগাওয়াট। ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ এখন প্রতি ইউনিট প্রায় ৫ টাকা। অন্যদিকে শিল্প-কারখানা প্রতি ইউনিট গ্রিড বিদ্যুৎ ৯ দশমিক ৯০ টাকায় এবং বাণিজ্যিক ভবন ১০ দশমিক ৫৫ টাকায় কিনছে। ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে দিনের বেলা গ্রিড বিদ্যুতের তুলনায় অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হবে।
গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক শফিকুল আলম বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত আমদানি কমাতে বাংলাদেশের ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, ছাদে সৌরশক্তির ব্যাপক ব্যবহারের অন্যতম বাধা হলো পর্যাপ্ত লোকবল না থাকা ও গুণগতমান নিশ্চিতকরা এবং প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাব।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাদে বাস্তবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবুজ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি সবচেয়ে সাশ্রয়ী, যা থেকে ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই তহবিলটির আকার মাত্র ৪০০ কোটি টাকা এবং আরেও ৬৯টি পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ঋণ সহজে পাওয়া যায় না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিও (ইডকল) ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে অর্থায়ন করে। তবে তা এই খাতের মোট চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমানে এ খাতে ব্যবহৃত সোলার প্যানেল এবং চারটি আনুষঙ্গিক উপকরণের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক ১১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এই খাতের বিকাশে উচ্চ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।
শফিকুল আলম বলেন, যেহেতু ছাদে স্থাপিত সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচিত এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার প্রক্রিয়া সহজ করা