গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা রবিউল আউয়ালকে (অন্তর) পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে অপহরণের পর ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তিনি সেখান থেকে একাই বাসযোগে ঢাকায় বন্ধুর বাসায় যান।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। রবিউল আউয়াল ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিষয়ক সহসম্পাদক। নিখোঁজ হওয়ার ৫৪ ঘণ্টা পর আজ সকাল সোয়া ছয়টায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার আশরাফাবাদ এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
![ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা রবিউল আউয়াল অন্তর](https://media.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2025-02-09%2Fr8ptixgh%2FPATUAKHALIDH123.png?w=640&auto=format%2Ccompress&fmt=webp)
রবিউলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, রবিউল নিখোঁজ হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকিতে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কলাপাড়া থানা–পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ সকাল সোয়া ছয়টায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার আশরাফাবাদে নবীনগরের নার্সারি গলির নুর হোসেন বাবুলের বাসা থেকে রবিউল আউয়ালকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পশ্চিম পাশের পাকা রাস্তার ওপর থেকে গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমানিক ১১টা থেকে যেকোনো সময় রবিউল আউয়াল (২৩) নিখোঁজ হন। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা সাদা মাইক্রোবাসযোগে এসে রবিউলের মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। এরপর তাৎক্ষণিক মাইক্রোবাস থেকে নেমে জোর করে তাঁকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে তাঁর ব্যবহৃত হেলমেট ও মোটরসাইকেল ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এরপর দুর্বৃত্তরা রবিউলকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে তিনি নিজে বাসযোগে ঢাকায় তাঁর বন্ধু মো. আল-আমিনের কাছে চলে যান। একই দিন রাতে আল-আমিনের সহায়তায় তিনি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বন্ধু নুর হোসেন বাবুলের বাসায় যান। কারা, কী কারণে তাঁকে অপহরণ করেছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিউল নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর ভাই তুষার আল মামুন বাদী হয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কলাপাড়া থানা–পুলিশ এ অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে।
রবিউলের বাবা মো. সোলায়মান মৃধা বলেন, ‘আমার ছেলে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষতিপূরণ আদায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের চাকরিসহ আট দফা দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। এরপর হঠাৎ আমার ছেলে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। ছেলের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আমরা গত তিনটা দিন আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় ছিলাম। তবে অন্তরকে খুঁজে পাওয়ার খবরে আমরা পরিবারের সবাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’ রবিউল কেন এবং কী কারণে নিখোঁজ হলেন সেই রহস্য সত্যিকারভাবে উন্মোচন করার দাবি জানান তিনি।